ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল বিপ্লবে অর্জিত সফলতার ফলে পৃথিবীর অনেক দেশেরই বাংলাদেশের সঙ্গে তাল মিলানোর সুযোগ নেই। পৃথিবীর হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি দেশ পঞ্চম প্রজন্মের টেলিকম প্রযুক্তি ফাইভ-জি-এর যুগে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ আগামী ১২ জিসেম্বর ৫জি যুগে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছরেরর পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে কম্পিউটারে বাংলা ভাষা উদ্ভাবন ও প্রয়োগে নেতৃত্ব দিচ্ছে, পৃথিবীতে ডিজিটাল বিপ্লব বাংলাদেশ থেকেই সূচনা হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী মঙ্গলবার রাজধানীর বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিসিএস কম্পিউটার সিটি আয়োজিত ৫দিনব্যাপী ‘বিজয়ে প্রযুক্তি মেলা ২০২১’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী সামনের ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল যন্ত্রের পরিবর্তন অবশম্ভাবী উল্লেখ করে বলেন, সামনের দিনে ডিজিটাল যন্ত্রের অভাবনীয় রূপান্তর আসছে। কম্পিউটার এবং মোবাইল আলাদা করে দেখার সুযোগ নাই। মোবাইলের চাহিদাও কম্পিউটারের দশ গুণেরও বেশি। সে বিবেচনায় একই ছাদের নিচে মোবাইলসহ আইওটি, এআই বা রোবটিক্স ডিভাইস পাওয়া গ্রাহকদের প্রত্যাশা। কম্পিউটার সিটিতে যাতে গ্রাহকরা কম্পিউটারের পাশাপাশি প্রযুক্তির সর্বশেস সংস্করণের ডিজিটাল যন্ত্র পায় তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ফাইভ-জি যুগে প্রবেশের দ্বারপ্রান্তে। গ্রাহকের ৫জি সেটসহ আইওটি ডিভাইসের চাহিদা মাথায় রেখে প্রচলিত ডিভাইসের পাশাপাশি নতুন নতুন ডিভাইসের চাহিদা মেটাতে বিক্রয় ও সেবার বিষয়টি নতুন করে ভাবতে হবে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশব্যাপী ডিজিটাল সংযোগ সম্প্রসারণের ফলে বাংলাদেশে উচ্চগতির ইন্টারনেটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ভারত এবং ভুটানে ইন্টারনেট ব্যান্ডইউথ রপ্তানি করছি।
দেশের কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির অবদান তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের ফলে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশে দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়।
তিনি কম্পিউটারের ওপর থেকে ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে ভ্যাট- ট্যাক্স প্রত্যাহার করে তিনি কম্পিউটারকে সাধারণের নাগালে পৌঁছে দেয়ার সুযোগ করে দেন। বিসিএস কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, এর আগে ১৯৮৭ সাল থেকে বিসিএস কম্পিউটার সমিতি কম্পিউটার প্রযুক্তির সাথে জনগণের সেতুবন্ধনের কাজটি করেছে।
তিনি বিসিএস এর দীর্ঘ পথযাত্রায় এর সদস্যদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগুলো সংকলিত করে রাখার জন্য সমিতির কর্মকর্তাদের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। বিসিসিএস কম্পিউটার সিটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এ এল মাজাহার ইমাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, বিসিএস কম্পিউটার সমিতির সভাপতি শাহিদ উল মনির এবং বিসিএস কম্পিউটার সমিতির প্রথম সভাপতি আহমেদ হাসান জুয়েল প্রমূখ বক্তৃতা করেন।
বক্তারা সময়ের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিসিএস কম্পিউটার সিটিকে কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইলসহ ডিজিটাল যুগের ডিভাইস বিক্রয়ের হাব হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।