সম্প্রতি ২০২০ সালের জন্য নিজেদের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মজিলা ফাউন্ডেশন। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় এ প্রতিবেদনে মজিলার আর্থিক উন্নতির চিত্র ফুটে ওঠে। প্রথমবারের মতো এবারের বার্ষিক প্রতিবেদনে সর্বশেষ তথ্যও প্রকাশ করেছে মজিলা। সম্প্রতি বেশ বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে মজিলা। বড় আকারের কর্মী ছাঁটাইসহ নিজেদের লাভজনক অংশ মজিলা করপোরেশনের পুনর্গঠন করেছে কোম্পানিটি। তবে আশার কথা হলো, ২০২১-এ তাদের আয় ৫০ কোটি ডলার ছাড়াতে যাচ্ছে। খবর টেকক্রাঞ্চ।
প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সত্ত্বেও কোম্পানিটির ফ্ল্যাগশিপ ব্রাউজার ফায়ারফক্স বাজারে বেশ প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। বর্তমানে ক্রেমিয়ামভিত্তিক ব্রাউজারের আধিপত্যের দরুন এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে ফায়ারফক্স। ২০২০ সালে সাবস্ক্রিপশন, বিজ্ঞাপন রাজস্ব ও সার্চ পার্টনারশিপের আওতায় মজিলা করপোরেশনের আয়ের পরিমাণ ছিল ৪৬ লাখ ৬০ কোটি ডলার। সার্চ পার্টনারশিপের দ্বারা আয়ের অধিকাংশই এসেছে গুগলের সঙ্গে সার্চ ডিলের আওতায়। ২০১৯ সালে এসব খাতে মজিলা করপোরেশনের আয়ের পরিমাণ ছিল ৪৬ লাখ ৫০ কোটি ডলার।
২০২১ সালে কোম্পানিটি নিজেদের প্রাক্কলিত আয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে ৫০ কোটি ডলারের বেশি। একই সময়ে মজিলার নতুন পণ্যগুলো ধীরে ধীরে আয়ের জোগান দিতে শুরু করেছে। মজিলার এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে মজিলা ভিপিএন সার্ভিস, ফায়ারফক্স রিলায় প্রিমিয়াম, পকেট ও অন্যান্য বাণিজ্যিক উদ্যোগ।
মজিলার নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) অ্যাঞ্জেলা প্লোহম্যান ও প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) এরিক মুহলহাইম জানান, চলতি বছরে মজিলার নতুন পণ্যগুলো থেকে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এসব পণ্য থেকে আহরিত রাজস্ব কোম্পানির মোট রাজস্ব আয়ে ১৪ শতাংশ পরিমাণ অবদান রাখবে। এ সময় ২০২০ সালের তুলনায় চলতি বছরে মজিলার ভিপিএন পরিষেবার দ্বারা আয় ৪৫০ শতাংশ বাড়বে বলেও জানান কোম্পানিটির ইভিপি ও সিএফও।
২০২০ সালে মজিলার ৮৬ শতাংশ আয়ে আহরিত হয়েছে গুগলের সঙ্গে করা সার্চ ডিলের মাধ্যমে। ২০১৯ সালে গুগলের সঙ্গে করা করা সার্চ ডিলের আওতায় মজিলার আয়ের পরিমাণ ছিল ৮৮ শতাংশ। তবে সব দিক দিয়েই মজিলা এখনো গুগলের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল।
নিজেদের আয় বৃদ্ধিতে সেবায় বৈচিত্র্য মজিলার জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে সার্চ ডিলের আওতায় রাজস্ব আহরণের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে পারে কোম্পানিটি, যেটি একই সঙ্গে মজিলার প্রতিদ্বন্দ্বীও। মজিলার সমাগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত না হওয়ায় নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছে গুগলের ক্রোম ব্রাউজার। এতে নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণতার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠছে মজিলা।
মজিলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিচেল বেকার বলেন, বিজ্ঞাপন নীতিমালা পরিবর্তন ও ভবিষ্যতে ওয়েবের ব্যবসায়িক কাঠামো একটি ভারসাম্যের মধ্যে আটকে থাকার ফলে আমরা আমাদের আয়ের জন্য নতুন ও দায়িত্বশীল উপায় খুঁজে বের করছি, যা আমাদের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আমাদের অন্যদের চেয়ে আলাদা করে।
তবে দিনের শেষে নিজেদের আয় বৃদ্ধি ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে ব্যবহারকারীদের আরো বেশি হারে মজিলার প্রতি নির্ভরশীল করতে হবে। সেটা ব্রাউজার অথবা মজিলা ভিপিএন ব্যবহারের মাধ্যমে হতে পারে।