ফটোগ্রাফি শিল্পকে ফিল্ম ক্যামেরা থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে নেওয়ার বেলায় নেতৃত্ব দিয়েছিল সনি। ডিএসএলআর আর মিররলেস ক্যামেরার বেলায় সম্ভবত একই ভূমিকা নিতে চাইছে ক্যানন।
ইওএস-১ডি এক্স মার্ক ৩ হবে ক্যাননের শেষ ‘টপ-এন্ড’ ডিএসএলআর ক্যামেরা, প্রতিষ্ঠানের পেশাদারী মানের ভবিষ্যৎ পণ্যগুলো হবে মিররলেস ক্যামেরা প্রযুক্তিনির্ভর। ডিএসএলআর বা ‘ডিজিটাল সিঙ্গল লেন্স রিফ্লেক্স’ ছেড়ে মিররলেস প্রযুক্তির দিকে ঝোঁকার কথা বলেছেন খোদ ক্যানন প্রধান ফুজিও মিতারাই। পরে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ক্যাননও একই কথা বলেছে।
মঙ্গলবার জাপানের দৈনিক ‘ইওমিউরি শিমবুন’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিতরাই মন্তব্য করেছেন, অন্তত আমাদের মতো যারা আরো উন্নত মানের ছবি এবং লেন্সের বেলায় স্মার্টফোনের চেয়ে বেশি সুবিধা চান, (তাদের জন্য) মিররলেস ক্যামেরাই ভবিষ্যৎ।
ক্যাননের পদক্ষেপ অপ্রত্যাশিত না হলেও, ক্যামেরা প্রযুক্তির ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বলে মন্তব্য করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট।
ফিল্ম ক্যামেরা যুগে ক্যানন নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছিল ইওএস লাইনের সিঙ্গল-লেন্স রিফ্লেক্স (এসএলআর) ক্যামেরা দিয়ে। ছবি তোলার সময় আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে ভিউফাইন্ডারে পাঠায় ‘রিফ্লেক্স’ মিররগুলো। ফিল্ম ক্যামেরার বেলায় মিররগুলো সরে গিয়ে আলো ফিল্মে পড়ার জায়গা করে দিত। একই প্রক্রিয়ায় কাজ করে ডিএসএলআর ক্যামেরা। পার্থক্য একটাই, ফিল্মের জায়গায় থাকে ইমেজ সেন্সর।
তবে, সনিসহ প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্বে ক্রমশ মিররলেস প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে ক্যামেরা শিল্প। এই প্রযুক্তিতে সরাসরি সেন্সরের উপর পড়ে আলো। আর ছবি তুলতে হয় ইলেকট্রনিক ভিউ ফাইন্ডার বা অথবা ক্যামেরার পেছনে থাকা ডিসপ্লেতে দেখে।
ডিএসএলআর ক্যামেরার সঙ্গে তুলনা করলে আকার, সহজ ব্যবহার, কম আওয়াজ, শাটার স্পিড আর অটো ফোকাসসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে মিররলেস ক্যামেরা প্রযুক্তি। তবে ব্যাটারি লাইফের হিসেবে এখনও ডিএসএলআর ক্যামেরাকে পেছনে ফেলতে পারেনি নতুন এই প্রযুক্তি।
২০২১ এর শুরুতেই ডিএসএলআর ক্যামেরা নির্মাণ বন্ধ করে সম্পূর্ণ মিররলেস ক্যামেরা উৎপাদনের দিকে ঝুঁকেছে সনি, যদিও প্রতিষ্ঠানটি পেশাদার আলোকচিত্রীদের মধ্যে ক্যনন ও নিকনের চেয়ে পেছনেই আছে এখনও। সিনেট বলছে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ক্যানন ও নিকন মিররলেস দৌঁড়ে যোগ দিতে একটু দেরি করে ফেললেও মানসম্পন্ন নতুন পণ্য দিয়ে বাজারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে বেশ দ্রুত।
ক্যানন সনি’র মতো তাড়ায় নেই বলে বলে জানিয়েছেন মিরাতাই, নতন কোনো মডেল না আনলেও আরও কয়েক বছর ‘ফ্ল্যাগশিপ’ ডিএসএলআর ক্যামেরার উৎপাদন চালু রাখবে প্রতিষ্ঠানটি। আর, বাজারে সাশ্রয়ী দামের ডিএসএলআর ক্যামেরার চাহিদা থাকায় ওই ক্যামেরাগুলোর উৎপাদন চালু রাখবে প্রতিষ্ঠানটি।