প্রযুক্তির হাত ধরে প্রচলিত আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থায় পরিবর্তনের হাওয়া আসে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। গত ৪০ বছরে প্রযুক্তির ব্যবহারে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় উত্কর্ষ সাধন হয়েছে। লেনদেন করতে এখন ব্যাংকে সশরীরে না গিয়ে ঘরে বসে স্মার্টফোনেই কাজ করা যায়। এবার ফিনটেক ট্রেন্ড প্রচলিত ব্যাকিং পরিষেবায় আরো বেশকিছু পরিবর্তন আনতে পারে। এমনটাই ধারণা করছেন গবেষকরা। চলতি বছর যেসব ফিনটেক ট্রেন্ড ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারে এ রকম চারটির তালিকা প্রকাশ করেছে টেক টাইমস।
ওপেন ব্যাংকিং: ওপেন ব্যাংকিং হলো অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেসের (এপিআই) মাধ্যমে কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশনে আর্থিক তথ্য বিনিময়ের সমন্বিত প্রচেষ্টা। বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করে এপিআই। একই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একাধিক সিস্টেমে সংযোগ স্থাপন করতে কাজ করে এপিআই। স্পারকাস ব্যাংক মাল্টা পিএলসির সিইও পল মিফসুড বলেন, ভোক্তারা একটি অ্যাকাউন্ট থেকেই ব্যাংকিং ও বিনিয়োগ পরিষেবা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। অনলাইন ব্যাংকিং এ সুবিধা এনে দিয়েছে ভোক্তাদের।
ব্লকচেইন: আর্থিক লেনদেন থেকে শুরু করে প্রতিবেদন প্রস্তুতসহ সব ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে ব্লকচেইন। ডিজিটাল লেজার টেকনোলজির (ডিএলটি) মাধ্যমে ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক ভোক্তাদের কাছে আস্থা ও স্বচ্ছতা তৈরি করেছে। বিশ্বস্ততা অর্জনের ফলে ডিজিটাল লেনদেনে কোনো তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে। যদিও এর মধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে ব্লকচেইন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, তবে এর আরো ভিন্ন মাত্রাও রয়েছে। নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা তৈরির ক্ষেত্রে ব্লকচেইন প্রযুক্তির অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
ডিসেন্ট্রালাইজড ফাইন্যান্স (ডিফাই): ব্লকচেইনের মতো বিকেন্দ্রীভূত ফাইন্যান্স বা ডিসেন্ট্রালাইজড ফাইন্যান্স মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্রোকারেজ, এক্সচেঞ্জ বা ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয়। এর পরিবর্তে এটি একটি ব্লকচেইনে স্মার্ট চুক্তি ব্যবহার করে। অন্য কোনো তৃতীয় পক্ষের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এ পদ্ধতিতে ঝুঁকিও বেশি। তবে ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে এটি বেশ কার্যকর।
ব্যাংকিং অ্যাজ এ সার্ভিস (বিএএএস): ভবিষ্যতে ব্যাংকের আরো প্রভাব বিস্তারের বিষয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। প্রচলিত অর্থে ব্যাংক সাধারণত বিটুসি মডেল হিসেবে চলে এলেও তা বর্ধিত করে বিটুবি মডেল প্রতিস্থাপনের সম্ভাবনা দেখছেন গবেষকরা। নতুন ব্যবসা খোলার পরিবর্তে ব্যাংকগুলো অ্যান্টি-মানি লন্ডারিংয়ের (এএমএল) ওপর গুরুত্ব বাড়াচ্ছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল নয় এমন ব্যবসাগুলোয় সাম্প্রতিককালে প্রযুক্তির ব্যবহারে আর্থিক লেনদেন হচ্ছে।