গত বছর বৈশ্বিক স্মার্টফোন চার বছরের সর্বোচ্চ বিক্রি হয়েছে। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ ও আইডিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর সিএনবিসি ও টেকক্রাঞ্চ।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রি ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৯ কোটি ইউনিট। অন্যদিকে আইডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রি বেড়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। পুরো বছরের হিসাবে স্মার্টফোন বিক্রি বাড়লেও গত বছরের শেষ প্রান্তিকে বিক্রি কমেছে। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী চতুর্থ প্রান্তিকে স্মার্টফোন বিক্রি কমেছে ৬ শতাংশ। অন্যদিকে আইডিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী তা কমেছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের উপাত্তে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে ১৫৬ কোটি ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে। তত্পরবর্তী তিন বছরে স্মার্টফোন বিক্রি কমেছে। উত্তর আমেরিকা, লাতিন আমেরিকা ও ভারতের বাজারে চাঙ্গা বিক্রির জেরে ২০২১ সালে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রি চার বছরের সর্বোচ্চে দাঁড়িয়েছে।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক হারমিত সিং ওয়ালিয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোন বাজারে প্রবৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রেখেছে ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে অ্যাপলের প্রথম ফাইভজি ফোন আইফোন ১২ বিক্রি। পরবর্তী দুই প্রান্তিকেও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল। আইফোন ১৩ উন্মোচন এবং বছরান্তের ছুটির মৌসুমে রেকর্ড সর্বোচ্চ ফোন বিক্রি করেছে অ্যাপল।
ভারতের মতো আরেকটি বৃহৎ বাজারে স্মার্টফোন বিক্রি বাড়লেও চীনের বাজারে বছরওয়ারি ২ শতাংশ কমেছে।
গত বছর স্মার্টফোন বিক্রিতে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে স্যামসাং। করোনাকালে ভিয়েতনাম কারখানা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও গত বছর স্যামসাংয়ের বিক্রি ৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ১০ লাখ ইউনিট। চীনের বাজারে রেকর্ড সর্বোচ্চ বাজার হিস্যার মাধ্যমে গত বছর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্মার্টফোন বিক্রি করেছে অ্যাপল। আইফোন ১২ ও আইফোন ১৩-এর ওপর ভর করে গত বছর অ্যাপলের স্মার্টফোন বিক্রি ১৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৭৯ লাখ ইউনিট। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপ ও ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাজারে বিক্রি বেড়েছে আইফোনের। এমনকি চতুর্থ প্রান্তিকে ৮ কোটি ১৫ লাখ ইউনিট আইফোন বিক্রি করে স্যামসাংকে হটিয়ে সর্বোচ্চ স্মার্টফোন বিক্রেতা ব্র্যান্ড ছিল অ্যাপল।
তৃতীয় স্থানে থাকা শাওমির বিক্রি ৩১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ইউনিট। স্যামসাং ও অ্যাপলের চেয়ে বেশ পিছিয়ে থাকলেও ভারতের মতো উদীয়মান বাজারে ২০১৮ থেকেই শীর্ষ বিক্রেতার স্থান ধরে রেখেছে চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডটি।
গত বছর দুই অংকের প্রবৃদ্ধি দেখেছে আরেক চীনা ব্র্যান্ড অপো ও ভিভো। তাদের স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ১৪ কোটি ৩২ লাখ ও ১৩ কোটি ১৩ লাখ ইউনিট।
করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে এলে এবং সরবরাহ চেইন সংকট নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে চলতি বছরেও স্মার্টফোন শিল্পের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদী কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ। তবে কিছু বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীরা বলছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ কিংবা ২০২৩ সাল নাগাদ বৈশ্বিক চিপ-স্বল্পতা বহাল থাকবে।