নানান কারণে হার্ট অ্যাটাকের সমস্যায় পড়ছেন অনেকে। এটি এমন সমস্যা বলে কয়ে আসে না। আগে থেকে সতর্ক হওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় হাসপাতালে পৌঁছাতে পৌঁছাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন রোগী। তবে এবার চোখের পরীক্ষা করেই জানা যাবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রয়েছে কি না।
কৃত্রিম মেধা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) নির্ভর একটি সিস্টেম ডেভেলপ করলেন বিজ্ঞানীরা। যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির হৃদরোগের সম্ভাবনা রয়েছে কি না তা জানা যাবে। আর তা সম্ভব চোখের স্ক্যান করে।
সম্প্রতি ব্রিটেনের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই অ্য়াডভান্সড সিস্টেম সম্পর্কে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। যার নেতৃত্বে ছিলেন লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অ্যালেক্স ফ্রাঙ্গি। তারা আবিষ্কার করেন যে, রেটিনায় ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলোর পরিবর্তনগুলো ভাস্কুলার রোগের সূচক যা হৃৎপিণ্ডকেও প্রভাবিত করে।
গবেষকরা একটি এআই সিস্টেমকে বেশ কিছু কৌশল ব্যবহার করে প্রশিক্ষিত করেছেন। যাতে সিস্টেমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেটিনাল স্ক্যান পড়তে পারে। নিয়মিত অপটিশিয়ানের কাছে সংগ্রহ করা হয় এবং যাদের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা রয়েছে, তাদেরও শনাক্ত করা যায়।
বর্তমানে চিকিৎসকরা বয়স, লিঙ্গ, ধূমপানের ইতিহাস, কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপের মতো সমস্যাগুলোকে বিবেচনা করে পরবর্তী দশ বছরে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনুমান করেন। তবে গবেষকদের দাবি, এই এআই সিস্টেম পরবর্তী ১২ মাসের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাভাস ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নির্ভুল দিতে সক্ষম। গভীর ভাবে কার্ডিওভাস্কুলার ডিটেকশনের জন্য দ্বিতীয় রেফারেল প্রক্রিয়া হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
গবেষকরা পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের রেটিনাল এবং কার্ডিয়াক স্ক্যান ব্যবহার করেছেন। ইউনাইটেড কিংডমের বায়োব্যাঙ্ক থেকে এই নমুনাগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই এআই বা আর্টিফিশিয়াল সিস্টেম রেটিনার প্যাথোলজি এবং রোগীর হৃৎপিণ্ডের পরিবর্তনের মধ্যে সম্পর্ক চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে।
এআই সিস্টেমটি সহজেই রেটিনাল স্ক্যান থেকে হার্টের বাম ভেন্ট্রিকলের আকার এবং পাম্পিং দক্ষতা অনুমান করতে পারে। এখন পর্যন্ত যা কেবল হার্টের ইকোকার্ডিওগ্রাফি বা এমআরআই-এর মতো টেস্টই নির্ধারণ করতে পেরেছে।