পটুয়াখালীর পায়রাতে দেশের সবচেয়ে বড় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বেলা ১২টার দিকে এক হাজার ৩২০টি পায়রা উড়িয়ে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সরকার প্রধান।
বিশ্বের ১৩তম দেশ হিসেবে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিকাল পদ্ধতিতে কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে কেন্দ্রটি থেকে। আমদানি করা কয়লা জাহাজে ঢাকনা দেয়া বেল্টের মাধ্যমে কয়লার ডোমে আনা হয়।
তাই জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার হলেও কয়লার দেখা পাওয়া যাবে না কেন্দ্রটিতে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির গ্রিড লাইন নির্মাণ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি গোপালগঞ্জ ও ঢাকার আমিনবাজার সাব স্টেশনেও বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
এর আগে সোমবার বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি পায়রায় অবতরণ করে। এসময় তাকে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
করোনা মহামারীর মধ্যে টুঙ্গিপাড়ার বাইরে এই প্রথম দেশের অন্যত্র সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে সকাল পৌনে ১১টার দিকে বিদ্যুৎ প্ল্যান্টে এসে পৌঁছান। পরে কোল জেটি এলাকার রাবনাবাদ নদীর মোহনায় ২২০টি নৌকার সমন্বয়ে এক মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান এই অঞ্চলের জেলেরা। এর মধ্যে ১০০টি পালতোলা নৌকা, ১০০ নৌকায় ছিল প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন। প্রতিটি নৌকায় রঙ-বেরঙের পোশাকে দুজন করে ৪০০ জেলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। বাকি ২০ নৌকায় ছিলেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা এবং রঙ-বেরঙের কাপড় ও কাগজ দিয়ে সাজানো হয় এসব নৌকা। সঙ্গে বাজানো হয় ‘ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে নাও ছাড়িয়া দে’ গানের যন্ত্রসংগীত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে সেই প্রদর্শনীর দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেন।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৪৮ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। অথচ প্রকল্পশেষে ব্যয় হয়েছে ২৩০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ১৯ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। দেশের বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম যা প্রাক্কলিত ব্যয়সীমার চেয়ে কমে কাজ শেষ করলো।
এনডব্লিউপিজিসিএল সূত্র জানায়, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৩তম দেশ হিসেবে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় নাম লেখালো। এশিয়ায় চীন, তাইওয়ান, জাপান ও মালয়েশিয়াতে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এই প্রযুক্তির কেন্দ্রগুলোর মধ্যে চীন ও বাংলাদেশ শুধু ঢাকনাযুক্ত কোল ইয়ার্ড ব্যবহার করে। ফলে পরিবেশগত ঝুঁকি আরও কমানো সম্ভব হচ্ছে।