বুয়েটের সঙ্গে যৌথভাবে আইসিটি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে হুয়াওয়ে বুয়েট-হুয়াওয়ে আইসিটি একাডেমির উদ্বোধন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সঙ্গে যৌথভাবে আইসিটি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি অবকাঠামো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। তরুণ শিক্ষার্থীদের তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদানের পাশাপাশি আইসিটি ট্যালেন্ট ও ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
একাডেমির উদ্বোধন উপলক্ষে বুধবার (২৩ মার্চ) বুয়েট কাউন্সিল ভবনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং, বুয়েটের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার প্রমুখ।
অলাভজনক শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এ আইসিটি একাডেমিতে শিল্পখাতের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা প্রদান করা হবে। এই একাডেমির আরেকটি প্রধান উদ্দেশ্য আইসিটি খাতের জন্য একটি ট্যালেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। একাডেমির শিক্ষার্থীরা সারা বিশ্বের তিন হাজারের বেশি প্রশিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পাবেন।
বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী একাডেমিতে ভিন্ন ভিন্ন ১৯টি বিষয়ে ৮৩টি সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম থাকবে। কোর্স এবং সার্টিফিকেশন কো-অর্ডিনেট করবে হুয়াওয়ে অথরাইজড ইনফরমেশন অ্যান্ড নেটওয়ার্ক একাডেমি (এইচএআইএনএ)। কোর্স শেষে শিক্ষার্থীদের এই আইসিটি একাডেমি থেকে ফলাফলের ভিত্তিতে তিন ধরনের গ্রেড সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। সেগুলো হলো – অ্যাসোসিয়েট, প্রফেশনাল ও এক্সপার্ট।
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, হুয়াওয়ে-বুয়েট আইসিটি একাডেমি দারুণভাবে কাজ করতে পারে, যা শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উভয়ের জন্য উপকারী হবে। হুয়াওয়ে এবং বুয়েট যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিল তার অধীনে স্বল্প সময়ের মধ্যেই তারা এই একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে। বুয়েটে এই একাডেমি স্থাপনের জন্য হুয়াওয়ের প্রতি আন্তরিক সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানান প্রতিমন্ত্রী।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, আইসিটি একাডেমি স্থাপনে হুয়াওয়ের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এই একাডেমিটি বুয়েটের বর্তমান শিক্ষা কারিকুলামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রায়োগিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারবেন। পাশাপাশি তারা ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে বিভিন্ন তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক ধারণাও পাবেন।
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং বলেন, ২০১৩ সাল থেকে আইসিটি ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য হুয়াওয়ে আইসিটি একাডেমি প্রকল্পের কাজ শুরু করে। বাংলাদেশেও এই প্রকল্প সম্প্রসারিত করতে পেরে হুয়াওয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। হুয়াওয়ে আইসিটি একাডেমি ‘বাংলাদেশে, বাংলাদেশের জন্য’ কাজ করে যাবে এবং শিক্ষাবিদ এবং শিল্প বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে তরুণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য সচেষ্ট থাকবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন বলেন, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য দক্ষ জনবল তৈরিতে বুয়েট সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। হুয়াওয়ের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে আইসিটি একাডেমি স্থাপন এ বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি।
বুয়েটের আইআইসিটির পরিচালক অধ্যাপক ড. রুবাইয়াত হোসাইন মন্ডল বলেন, আইসিটি খাতের নতুন উদ্ভাবনগুলো টেকসই প্রবৃদ্ধি, অর্থনীতি, প্রোডাক্টিভিটি ও চাকরির বাজারের রূপান্তরে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এই আইসিটি একাডেমি একাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সেতুবন্ধনকে আরও জোরদার করবে। একই সঙ্গে উন্নতমানের আইসিটি প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে এটি বাংলাদেশে দক্ষ জনবল তৈরিতে অবদান রাখবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান বলেন, এ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ, এরকম একটি একাডেমি আমাদের জন্য খুবই দরকার ছিলে। আমরা একটি রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে যাদের জ্ঞান ও দক্ষতা রয়েছে তারা এ রূপান্তর প্রক্রিয়াকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবেন।
বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে হুয়াওয়ের এ ধরনের দেড় হাজারের বেশি আইসিটি একাডেমি রয়েছে। এখন পর্যন্ত পাকিস্তান, জাম্বিয়া ও চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ একাডেমি কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে হুয়াওয়ে-বুয়েট আইসিটি একাডেমি যাত্রা শুরু করছে।