ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের পর এবার নতুন মিশন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে এই স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়নে যাত্রা শুরু করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার গণভবনে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’-এর তৃতীয় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, “প্রযুক্তি যেমন আমাদের জন্য সুযোগ তৈরি করে, এটি সমস্যারও সৃষ্টি করতে পারে। এই দিক থেকে, আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যাংকে জমা হওয়া টাকা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই আমাদের এটি এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে হবে (সতর্ক থাকতে হবে)।’
প্রযুক্তির অগ্রগতি দিন দিন বাড়তে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’প্রতিদিন নতুন নতুন চিন্তা আসবে।’
গবেষণা বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রযুক্তির উৎকর্ষতা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকবে, এজন্য গবেষনার ওপর আমাদের আরও বেশি করে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের গবেষণা সব সময় দরকার। তাই গবেষণার কাজ অব্যহত রাখতে হবে, যাতে আমরাও যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি এবং বাংলাদেশ যেন সকলের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। সেটাই আমি চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবো কেন ? আমাদের দেশের মানুষের মেধা আছে। সেটা বিকাশের সুযোগ করে দিলে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারবো।’
যুব সমাজকে দক্ষ করে গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজকে তৈরি করতে হবে। কারণ আমরা যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলছি, তা শুধু চিন্তা করা না। বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের তরুণ সমাজকে আরও বেশি উপযুক্ত করে গড়ে তোলা, উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া, উপযুক্ত ট্রেনিং দেওয়া বা তাদেরকে সেভাবে গড়ে তোলা বা তাদের মন মানসিকতাকে সেভাবে গড়ে তোলা, সেটাই আমাদের করতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সবচেয়ে বড় কথা আমাদের তরুণ সম্প্রদায়ের সংখ্যা বেশি। যে কারণে আমরা যদি তাদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারি, শুধু এই প্রজন্মকে না, সামনের প্রজন্মকেও আমরা কিভাবে গড়তে পারি, তার প্রতি গুরুত্ব দেই, তাহলে বাংলাদেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট এ যেতে পারবে। সেই সাথে সাথে আমাদের শিক্ষা দীক্ষা, শিল্প-বাণিজ্য, অর্থনীতি সব দিক থেকেই আমরা এগুতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি।”
‘মেধা পাচার’ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “আরেকটা বিষয় অনেকে বলেন যে আমাদের মেধা চলে যাচ্ছে, এটা নিয়ে আমি খুব বেশি চিন্তা করি না। কারণ এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে যেমন অনেকে বাইরে যান, টাকা পয়সা কামাই করেন,তেমন অনেকেই কিন্তু, দেশে ফিরে আসছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অনেকেই, বিশেষ করে যারা নিউ জেনারেশন, তারা কিন্তু চলে আসছেন। এসে কাজ করছেন। কারণ আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ফলেই কিন্তু কাজগুলো সহজ হয়ে গেছে যে কারণে তারা এখন দেখেন যে বাংলাদেশে বসেও তারা নিজেদের কাজগুলো ভালো ভাবে করতে পারছেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ কিন্তু এখন একটা আকর্ষনীয় স্থান, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। আমাদের গৎবাঁধা পুরোনো কথা আর বলার দরকার নেই- যে ‘ব্রেন ড্রেন’হচ্ছে। আমাদের তো লোকের অভাব নেই। আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং আসবে। বরং বাইরের থেকে বাংলাদেশের অবস্থা এখন অনেক দিক থেকে ভালো। অনেক ভালো অবস্থায় এখন আমরা আছি।”