রাশিয়ার নজরদারি ড্রোন ও অন্যান্য সমরাস্ত্রে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি চিপ ব্যবহূত হয়ে আসছিল। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কিংবা কোম্পানিগুলোর অজ্ঞাতে এ চিপ ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে জো বাইডেন প্রশাসন। এর আওতায় রাশিয়ার প্রযুক্তি খাতের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি। রাশিয়ার বৃহত্তম চিপ নির্মাতা ও মাইক্রোইলেকট্রনিকস রফতানিকারক কোম্পানি মাইক্রনও এ তালিকায় রয়েছে। খবর রয়টার্স।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত সর্বশেষ এ নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য রাশিয়ার প্রযুক্তি শিল্প, আগের অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটাতে ব্যবহূত নেটওয়ার্ক ও রুশ হ্যাকাররা। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন এক বিবৃতিতে বলেন, এ অর্থহীন ও আরোপিত যুদ্ধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা পুতিনের ওয়ার মেশিনকে টার্গেট করা অব্যাহত রাখব। এ পর্যন্ত রাশিয়ার ২১টি প্রতিষ্ঠান ও ১৩ জন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ। সামনে আরো তিনটি খাতে ওয়াশিংটন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিতে পারে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। মহাকাশ, সামুদ্রিক ও ইলেকট্রনিকস খাতে কাজ করছে রাশিয়ার এমন যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর আওতায় পড়তে পারে।
নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে থাকা সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে ওই রুশ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা তাদের সঙ্গে লেনদেনও করতে পারবে না। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরো আছে মস্কোভিত্তিক কোম্পানি ‘সের্নিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং’ ও যন্ত্রাংশ নির্মাতা ‘সের্টাল’। তাদের বিরুদ্ধে বেসামরিক খাতে ব্যবহারের কথা বলে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা খাতের জন্য বেআইনি প্রক্রিয়ায় যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি কেনার অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ওই দুই কোম্পানিসহ অন্য যে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের আরোপিত অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটানোর নেটওয়ার্কের অংশ ছিল বলে ওয়াশিংটনের ভাষ্য।
টেকইনসাইটসের চিপ ইকোনমিস্ট ড্যান হাচেসন বলেন, চলতি বছরে ৫৭ হাজার ৮০০ কোটি ইউনিট চিপ উৎপাদন করবে বৈশ্বিক চিপ শিল্প। এর মধ্যে ৬৪ শতাংশ কমোডিটি চিপ।
ড্রোন, গাইডেড মিসাইল, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান, গাড়ি ও ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ইকুইপমেন্টে চিপ ব্যবহূত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেখানে প্রায়ই পুরনো চিপ ব্যবহূত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়াসংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে একেবারে জরুরি চিপ বিক্রিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।