ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে অত্যাধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ নতুন মডেলের ওয়াশিং মেশিন বাজারে ছেড়েছে দেশের সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটন। টপ লোডিং সিস্টেমের নতুন ‘এটিভি ৯০’ মডেলের ওয়াশিং মেশিনটির ধারণক্ষমতা ৯ কেজি এবং দাম ৩২ হাজার ৯৫০ টাকা।
শনিবার (এপ্রিল ১৬, ২০২২) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র সদরদপ্তরে ওই নতুন মডেলের ওয়াশিং মেশিন উদ্বোধন করা হয়। নেদারল্যান্ডের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে ওয়ালটন সদরপ্তর পরিদর্শনে এসে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ গ্রেড-১ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিকর্ণ কুমার ঘোষ ওয়াশিং মেশিনের ওই নতুন মডেলের উদ্বোধন করেন।
তার সফরসঙ্গী ছিলেন নেদারল্যান্ডের আইনদোভেন ইন্টারন্যাশনাল প্রোজেক্ট অফিস (ইআইপিও) এর সহ প্রতিষ্ঠাতা পিটার পোর্থেইন ও জুস্ট হ্যালম, স্টার্ট-আপ বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শামি আহমেদ।
শনিবার সকালে অতিথিরা ওয়ালটন কারখানা প্রাঙ্গণে পৌঁছলে তাদেরকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান ওয়ালটনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ। সেসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর লিয়াকত আলী, ওয়ালটন হাই-টেকের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান কর্নেল (অব.) এস এম শাহাদাত আলম, এডমিন বিভাগের প্রধান ইয়াসির আল ইমরান প্রমূখ।
এরপর অতিথিরা ওয়ালটন সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুমে একটি করপোরেট ভিডিও ডক্যুমেন্টারি উপভোগ করেন। পরে ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার ঘুরে দেখার পাশাপাশি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজ সমৃদ্ধ রেফ্রিজারেটর, কম্প্রেসর, এসএমটি, পিসিবি, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক গ্রেড-১ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিকর্ণ কুমার ঘোষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনিমার্ণের মাইলফলক অর্জনের পথে বড় অবদান রাখছে ওয়ালটন। বিশেষ করে আইটি ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন খাতে বাংলাদেশের যে অভাবনীয় উন্নতি ও সাফল্য, ওয়ালটন হাই-টেক পরিদর্শন করলে তা উপলব্ধি ও দেখা যাবে। ওয়ালটনের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের আইটি ও ইলেকট্রনিক্স খাতে বিনিয়োগ করছে দেশি, বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান।
এদিকে ওয়ালটনের অসংখ্য প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি, অত্যাধুনিক প্রোডাকশন লাইন, ডিজাইনিং ও কারখানার উন্নত কর্ম পরিবেশ দেখে অভিভূত হন নেদারল্যান্ডের আইনদোভেন ইন্টারন্যাশনাল প্রোজেক্ট অফিস (ইআইপিও) এর সহ প্রতিষ্ঠাতা পিটার পোর্থেইন ও জুস্ট হ্যালম।
জুস্ট হ্যালম বলেন, ওয়ালটন টেকনোলজি, নতুন পণ্য ডিজাইনিং ও ইনোভেশনে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। কর্ম পরিবেশও অনেক উন্নত। ওয়ালটন বাংলাদেশের জন্য এক গর্ব। গ্লোবাল ব্র্যান্ড ফিলিপস এর সঙ্গে ওয়ালটনের তুলনা করে তিনি বলেন, ওয়ালটনের সামগ্রিক অগ্রগতি ফিলিপস এর মতোই। তার প্রত্যাশা- ওয়ালটনেরই হাত ধরেই বাংলাদেশের আইসিটি ও হাই- টেক শিল্পের টেকসই ভীত গড়ে উঠবে।
পিটার পোর্থেইন বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ওয়ালটন। সাশ্রয়ী দামে গুণগতমানের পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দ্রুত শীর্ষে উঠেছে ওয়ালটন। ওয়ালটন ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে পণ্য উৎপাদন করছে। জার্মানিসহ ইউরোপের আরো অনেক দেশে টেলিভিশন রপ্তানি করছে ওয়ালটন। ভবিষ্যতে ইউরোপ জুড়ে ওয়ালটনের এক বিশাল রিটেইল নেটওয়ার্ক তৈরি হবে বলে তিনি আশাবাদী।
ওয়ালটনের সদরপ্তরে ওয়াশিং মেশিন ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টের দুটি সর্বাধুনিক প্রোডাকশন লাইন রয়েছে। সেখানে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ফ্রন্ট লোড, টপ লোড অটোমেটিক ও সেমি অটোমেটিক টাইপের মোট ৩০ মডেলের ওয়াশিং মেশিন উৎপাদন করা হচ্ছে।
নতুন ‘এটিভি৯০’ মডেলের ওয়াশিং মেশিনের প্রযুক্তি ও ফিচার সমন্ধে ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিনের রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন (আরএন্ডআই) সেন্টারের বিভাগীয় প্রধান হাবিব ইফতেখার আলম জানান, ইউরোপীয় এনার্জি স্ট্যান্ডার্ড তৈরি নতুন মডেলের ওয়াশিং মেশিনে প্রতি ওয়াশে বিদু্যুৎ খরচ হবে ১ টাকারও কম। ভেতরে ২.৩ মিমি ছোট ছিদ্র কাপড় আটকে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। এছাড়া ৫টি ভিন্ন ধরণের ঘূর্ণন কৌশল কাপড়কে কোনো ক্ষতি ছাড়াই ওয়াশ করে।
ওয়ালটন হোম অ্যাপ্লায়েন্সের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) আল ইমরান জানান, ওয়ালটন প্রতিনিয়ত বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তি ও ফিচার সমৃদ্ধ নতুন নতুন মডেলের ওয়াশিং মেশিন সাশ্রয়ী দামে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছে। তাই স্থানীয় বাজারে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ওয়াশিং মেশিনের গ্রাহকপ্রিয়তা বাড়ছে অতি দ্রুত। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী নতুন মডেলের ওয়াশিং মেশিন বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। ক্রেতারা জিরো ইন্টারেস্টে ১২ মাসের কিস্তি সুবিধার পাশাপাশি ২৯টি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পেমেন্টর মাধ্যমে কিনতে পারছেন ওয়ালটনের ওয়াশিং মেশিন।
কর্মকর্তারা জানান, ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন কেনায় বাংলাদেশের ক্রেতারা পাচ্ছেন ফ্রি ইনস্টলেশন সুবিধা। তিন বছরের বিক্রয়োত্তর সুবিধার সঙ্গে থাকছে এক বছর পর্যন্ত হোম সার্ভিস। ইনভার্টার মোটরে ক্রেতারা উপভোগ করছেন সর্বোচ্চ ১২ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা। আছে ৩ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি।