ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে অনুষ্ঠিত হলো বর্ণাঢ্য এক অ্যাওয়ার্ড সিরিমনি। অনুষ্ঠানে ইনোভেটিভ আইডিয়া (উদ্ভাবনী চিন্তা) প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, ব্যয় সংকোচন, কর্মপন্থার উন্নয়ন, ব্যবসায় সম্প্রসারণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য সদস্যদের পুরস্কৃত করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ।
যেসব ক্ষেত্রে ওয়ালটন পরিবারের সদস্যদের পুরস্কৃত করা হয় সেগুলো হলো – প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট ডিসটিংশন অ্যাওয়ার্ড সিজন-২, কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড সিজন-১ এবং চ্যাম্পিয়ন্স অব ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড সিজন-১।
মঙ্গলবার (১৭ মে, ২০২২) বিকালে গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে বিজয়ীগণের হাতে পুরস্কারের অর্থ, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেন ওয়ালটন এমডি ও সিইও।
সে সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কর্নেল (অব.) শাহাদাত আলম, ফিরোজ আলম, তাপস কুমার মজুমদার, তানভীর রহমান, আনিসুর রহমান মল্লিক, মোস্তফা নাহিদ হোসেন, সোহেল রানা, ইয়াসির আল ইমরান, মাহফুজুর রহমান, আল ইমরান, আরিফুল আম্বিয়া ও তাহসিনুল হক, এক্সিউিটিভ ডিরেক্টর আজিজুল হাকিম, জিনাত হাকিম, শাহজালাল হোসেন লিমন, আবদুল্লাহ আল মামুন, তানভীর আঞ্জুম, তোফায়েল আহমেদ, দিদারুল আলম খান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে তরুণ সদস্যদের উদ্দেশ্যে ওয়ালটন এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ বলেন, আজকে ওয়ালটন ৩০ হাজার সদস্যের বিশাল একটি পরিবার। গত একযুগে পরিবারের সদস্য ১০ গুণ বেড়েছে। পরিবার বড় হলে দায়িত্ব বোধ বেড়ে যায়। এ দায়িত্ব আমরা এড়াতে পারি না, অবহেলা করতে পারি না। দু-এক বছর আগে আমি যেসব আইডিয়া নিয়ে ভাবতাম, সেগুলো আজ সবার মাঝে দেখতে পাচ্ছি। আমি যে স্বপ্ন দেখছি, আপনাদের মাধ্যমেই সেগুলোর বাস্তবায়ন হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাধা-বিঘ্ন আসবে কিন্তু থেমে গেলে চলবে না। এটা অনেকটা ফুটবল খেলার মতো। খেলা থামানো যাবে না। খেলা থামলে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো না। সফলতার চাবি আপনার নিজের মধ্যেই লুকানো আছে। আপনাকেই সেটা খুঁজে পেতে হবে। নিজেকে ডেভেলপমেন্ট করতে হবে। স্বপ্ন ধারণ করতে হবে। সফলতা বা ব্যর্থতা নিজের ওপর নির্ভর করে। আপনার সফলতা বা ব্যর্থতার জন্য আপনার পাশে যে আছে, সে দায়ী না। কারণ কেউ সারা জীবন আমাদের সঙ্গে থাকে না। সুতরাং কাউকে দায়ী করা নিজের ব্যর্থতা ঢাকার অপচেষ্টা মাত্র। মাটি একই রকম উর্বর। সবার জমিতেই বৃষ্টি পড়ে। কারো জমিতে ভালো ফসল হয়। কারো হয় না। এর কারণ একজন সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিচ্ছে। নিবেদিতভাবে কাজ করছে। সে সফল হচ্ছে। আর যে দিচ্ছে না, সে ব্যর্থ হচ্ছে।
তরুণ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের উদ্দেশ্যে ওয়ালটন সিইও বলেন, সব সময় পরিস্থিতি আপনার অনুকূলে থাকবে না। কিন্তু এর মধ্য থেকেই আপনার মনের মধ্যে যে ‘আপনি’ আছে, তাকে জাগাতে হবে। আপনার চিন্তা-ভাবনা, কর্মদক্ষতা আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রত্যেকের ইচ্ছাশক্তির ডেভেলপ, ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন আসলেও সাসটেইনেবল হবে না। নিজের চেহারা নোংরা থাকলে আয়না পরিস্কার করলে লাভ হবে না। আগে নিজের মুখমন্ডলের ময়লা পরিস্কার করতে হবে। নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারলে আপনার অবস্থার পরিবর্তন হবে। আপনার সম্মান বাড়বে। তাই সবাইকে বলবো নিজের ইচ্ছাশক্তিকে জাগিয়ে তুলুন। ইচ্ছাশক্তিতে বলিয়ান হয়ে যদি সামনে এগিয়ে যান, তবে জয় আপনাদের হবেই। আপনারা সফল হবেনই। সব সময় হাসিখুশি থাকবেন। তাহলে অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে।
চ্যাম্পিয়ন্স অব ইনোভেশন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী এবং বিজয়ীসহ সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে গোলাম মুর্শেদ বলেন, আমরা চেষ্টা করবো প্রতিমাসে এরকম অ্যাওয়ার্ড দিতে।
উল্লেখ্য, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদের উদ্যোগে চ্যাম্পিয়ন্স অব ইনোভেশন প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষ্যে গত ৯ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর ২০২১ পর্যন্ত সময়ে ওয়ালটনের সব সদস্যদের কাছ থেকে তিনটি ক্যাটাগরিতে উদ্ভাবনী চিন্তা, মতামত ও আইডিয়া নেয়া হয়। ক্যাটাগরিগুলো হলো বিজনেস ইনোভেশন, প্রোসেস ইনোভেশন এবং পেপার ফ্রি ওয়ালটন।
ওয়ালটনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি আইডিয়াগুলো যাচাই-বাছাই করে। সেখান থেকে প্রতিটি ক্যাগারিতে ১০ জন করে মোট ৩০ জনকে বিজয়ী হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
চ্যাম্পিয়ন্স অব ইনোভেশন প্রতিযোগিতার বিজনেস ইনোভেশন ক্যাটাগরিতে প্রথম তিনজন হলেন আশিক-ই-ইলাহী, আহমেদ শফিউল্লাহ এবং মাহমুদুল হাসান। প্রোসেস ইনোভেশন ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন প্রথম তিনজন হলেন তাজবিদ শাহ, এ.এফ.এম. নাসির উদ্দীন এবং সোহাল ইসলাম। আর পেপার ফ্রি ওয়ালটন ক্যাটাগরিতে প্রথম তিনজন হলেন নাজমুল হোসেইন, আশিকুর রহমান ভুঁইয়া, মাহমুদুল হাসান ও নূরুনবী (যৌথভাবে দ্বিতীয়) এবং সাব্বির আহমেদ।