দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড, যার উদ্যোক্তাও এ মাটির-ই সন্তান এবং যার পণ্যও তৈরি হয় এ দেশেই। সেই দেশীয় ইলেকট্রনিকস পণ্যের সমাহার নিয়ে গড়ে ওঠা মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। মানুষের আস্তা ও ভালোবাসার জায়গা দখল করে দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্ব জয়ের লক্ষ্যে ২০০২ সাল থেকে যাত্রা শুরু করেছে মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ।
মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপের ২০ তম বর্ষপূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে শনিবার রাতে রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলের বলরুমে ই-কমার্স সাইট “ই-রাজ”-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। মিনিস্টারের এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে দ্রুত সময়ে মানসম্মত পণ্য ডেলিভারি নিশ্চিত সহ দেশী-বিদেশী সকল ব্র্যান্ডের যাবতীয় ধরনের, ইলেকট্রনিক, ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সের যাবতীয় পণ্য অনায়াসে ক্রয় করতে পারবেন গ্রাহকরা।
মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি এম এ রাজ্জাক খান রাজ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো: জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম, এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। অুনষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিজিএমইএ’র সভাপতি হচ্ছেন ফারুক হাসান, ডিএমপি-এর কমিশনার মো: শফিকুল ইসলাম বিপিএম, এডিশনাল আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বিপিএম, পিপিএম; এডিশনাল আইজি মো. শাহবুদ্দিন খান বিপিএম; মিনিস্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলরুবা তনু সহ বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডি গণ, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক ব্যক্তিবর্গ এবং মিনিস্টার গ্রুপের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দ।
মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপের ২০ তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানকে অভিনন্দন জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, “২০০২ সালে সাদাকালো টেলিভিশন দিয়ে শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি এখন নানা ধরণের ইলেকট্রনিকস পণ্য তৈরি করে চলছে। ২০২২-২০২৩ বাজেটে দেশীয় পণ্যের উপর জোর দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়াও বিলাস জাতীয় পণ্য আমদানিতে শুল্ক নির্ধারণ করা হযেছে। যাতে আমরা বিদেশী পণ্য আমদানিতে ঝুঁকে না পড়ি। আর এই সময়ে মিনিস্টারের মতো দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো আমাদের দেশীয় পণ্য দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করে চলছে। শিল্প ক্ষেত্রে বিশ্বের বিনিয়োগ অনুকুল পরিবেশ থাকলে আমাদের ব্যবসায়ীরা আরও এগিয়ে যাবে। মিনিস্টার গ্রুপ দেশের চাহিদা পূরণ করে বিশ্বের দরবারে দেশীয় পণ্য রপ্তানির যে লক্ষ্য নিয়েছে সেজন্য প্রতিষ্ঠানটিকে আন্তরিকভাবে সাধুবাদ জানাই।”
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, “বিশ্ব জয়ের যে প্রত্যয় ও স্বপ্ন দেখেছে মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ সেটি আগামী ২০ বছর পরে ৪০ বছর পূর্তিতে বাস্তবে রুপান্তরিত হবে বলে আশা করছি। বর্তমানে দেশের ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত রয়েছে এবং ১৩ বছরে দেশের ইলেকট্রনিকস শিল্প সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যার অবদান দেশীয় ইলেকট্রনিকস শিল্পগুলো। আগামীর উন্নত দেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকাও পালন করবে মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ। এছাড়াও সম্প্রতি মিনিস্টার হাই-টেক পার্ককে প্রাইভেট হাই-টেক পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হবে।”
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো: জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, “‘আমার পণ্য, আমার দেশ, গড়বো বাংলাদেশ’ এই শ্লোগানে ২০ বছর পার করেছে মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ। পরিশ্রম যেন মানুষকে সফলতা এনে দেয় তার উদাহরণ হচ্ছে মিনিস্টার গ্রুপ। বাংলাদেশ পোশাক খাতে যেমন এগিয়েছে ঠিক তেমনি ইলেকট্রনিকস খাতেও এগিয়ে যাবে। আমরা চাই মেড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ডটি পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক।”
ঢাকা উত্তর সিটি করর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “দেশের গার্মেন্টস শিল্পকে যেমন দাবিযে রাখা যায়নি ঠিক তেমনি ভাবে ইলেকট্রনিকস শিল্পকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ সেই ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও যুব সমাজকে খেলাধুলার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার কাজও করছে মিনিস্টার গ্রুপ।”
এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, “এবারের বাজেটকে শিল্প বান্ধব বাজেট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দেশীয় ইলেকট্রনিকস শিল্পকে এগিয়ে নিতে কম্প্রেসার বানানোর জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বর্তমান সরকার। যার মাধ্যমে দেশীয় ইলেকট্রনিকস শিল্পের দাম অনেকটা কমে আসবে।”
সভাপতির বক্তব্যে মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি এম এ রাজ্জাক খান রাজ বলেন, “আমরা খুবই আনন্দিত যে সফলতার সাথে ২০তম বছর পূর্তি পালন করতে পেরেছি। এই সফলতার পেছনের সব থেকে বড় অবদান ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সহযোগিতায় আজ আমরা দেশীয় ভাবেই সকল ধরণের পণ্য নিয়ে আসতে পেরেছি। প্রতিষ্ঠানটি শুরুর অল্পদিনেই দেশের সেরা ব্র্যান্ড হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করি এবং দেড় যুগ পেরিয়েও সেই জনপ্রিয়তা ধরে রাখার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে আমাদের কর্মীরা।”
“ই-রাজ” প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “ক্রেতাদের সহজ, ঝামেলাবিহীন এবং দ্রুততম সময়ে ভালো পণ্য উপহার দেওয়ার লক্ষ্যেই মিনিস্টারের মানসম্মত পণ্যসম্ভার নিয়ে আমরা এই ই-কমার্স “ই-রাজ” সেবা চালু করেছি। যেখানে ঘরে বসেই ক্রেতারা সহজেই শুধু মিনিস্টারের ইলেকট্রনিক পণ্য নয়, দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ইলেকট্রনিক, ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সের সকল পণ্য ক্রয় করতে পারবে। “ই-রাজ” এর সেবাগুলোর মাঝে থাকবে, দ্রুত ডেলিভারির নিশ্চয়তা, মানসম্মত ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের সমাহার। এছাড়াও মিনিস্টার গ্রুপের উপর আস্থা রাখায় সকল স্টেকহোল্ডার ও গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।