ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ফাইভ-জি প্রযুক্তি সেবা কেবল গ্রাহকদের জন্য মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ভয়েস কলের প্রযুক্তি নয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস), রোবটিকস, বিগডাটা, ব্লকচেইন, হিউম্যান টু মেশিন, মেশিন টু মেশিন ইত্যাদি প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট সিটি, স্মার্ট হোম, স্মার্ট ফ্যাক্টরি সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। এটি ডিজিটাল যুগের মহাসড়ক।
রবিবার (১৩ জুন) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে উন্নত বিশ্বে ফাইভ-জি প্রযুক্তির ব্যবহার ও দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের প্রয়োগ বিষয়ক অবহিতকরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তা এবং এর অধীন সব অধিদফতর ও সংস্থা প্রধানরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় হুয়াওয়ে বাংলাদেশ লিমিটেড বিশ্বব্যাপী ফাইভ-জি প্রযুক্তির ব্যবহার পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ফাইভ-জি প্রযুক্তি পরীক্ষা ও ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ-জি যুগের যাত্রা শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘থ্রি–জি বা ফোর–জির মতো ফাইভ–জি প্রযুক্তি শুধু মুঠোফোন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ওয়াই–ফাই’র মতো প্রযুক্তিতে যেকোনও ডিভাইস বা যন্ত্রের সঙ্গে যন্ত্রের সংযুক্তিও থাকতে পারবে। এই প্রযুক্তি ভার্চুয়াল মাধ্যমে সবাইকে সংযুক্ত করতে সক্ষম হবে এবং মেশিন, অবজেক্ট ও ডিভাইসগুলোকে একই সূত্রে গাঁথবে। ফলে তথ্য আদান-প্রদান, ভিডিও কল, কল কনফারেন্স এবং ইন্টারনেটভিত্তিক সেবাসহ দেশে শিল্প বাণিজ্য ও কৃষি এবং মৎস্য চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।’
ফাইভ জি প্রযুক্তি সম্পর্কে হুয়াওয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রয়োগ ও এর প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে। উপস্থাপনায় ফাইভ-জি কী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফাইভ-জি’র প্রয়োগ ও এর প্রভাব এবং বাংলাদেশে ফাইভ-জির প্রস্তুতি ও করণীয়সহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। বিশ্বের ৭২টি দেশে বর্তমানে ফাইভ-জি চালু রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ২০১৯ সালে এই প্রযুক্তির যাত্রা শুরু করে।
পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপনায় বলা হয়, সর্বত্র ফাইভ-জি চালু হলে দূরে থেকেও ঘরের লাইট, ফ্যান, এসি ও কৃষিক্ষেত্রে পানির পাম্প চালু বা বন্ধ, পুকুরে মৎস্য চাষ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
এসব সুবিধা পেতে হলে বিদ্যমান টাওয়ারগুলো ফাইভ-জিতে রূপান্তর করতে হবে এবং গ্রাহকদের লাগবে সেই উপযোগী হ্যান্ডসেট। বডি ফিটনেস ডিভাইস নিজের শরীরের সঙ্গে ব্যবহার করে বডি থেকে সিগন্যাল পাঠাতে মিলি সেকেন্ড সময় লাগবে। গাড়ির লোকেশন, স্পিড, ডেস্টিনেশনসহ ট্রাফিকের সব ইনফরমেশন হাতের মুঠোয় চলে আসবে। ফলে ড্রাইভিং, গাড়ি দুর্ঘটনা কমাতে সহায়ক হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব জানান, প্রাথমিকভাবে রাজধানী ঢাকার ২০০টি জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে এই পরিষেবা চালু হবে। তিনি ফাইভ-জি প্রয়োগ বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।