আর চলবে না মাইক্রোসফটের ব্রাউজার ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। ২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকেই ব্রাউজারটি বন্ধ হওয়ার কথা ছিল। তবে এর প্রায় এক বছর পর এটি আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি মাইক্রোসফট।
এর মধ্য দিয়ে চালু হওয়ার ২৭ বছর পর বুধবার (১৫ জুন) থেকে বন্ধ হয়ে গেল একসময়ের জনপ্রিয় ব্রাউজারটি। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার আইই বা এমএসআইই হিসেবেও পরিচিত ছিল। ১৯৯৫ সালে ব্রাউজারটির প্রথম পথচলা শুরু হয়।
উইন্ডোজ ৯৫-এর সঙ্গে অ্যাড-অন প্যাকেজ হিসেবে এ ব্রাউজার চালু করে বিল গেটস ও পল অ্যালেনদের মাইক্রোসফট। এরপর অবশ্য উইন্ডোজের পুরো প্যাকেজের সঙ্গেই ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার দিতে শুরু করে কোম্পানিটি। চালু হওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বজুড়ে কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা ব্রাউজার বলতে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারকেই বুঝত।
অনেকেরই প্রথম ই-মেইল, গুগল, ইয়াহু ও অরকুটের অভিজ্ঞতা এই ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার থেকেই। ওই সময় বিশ্বব্যাপী প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষই এ ব্রাউজারটি ব্যবহার করত। অত্যধিক জনপ্রিয়তার কারণে ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্রাউজারটির ১১টি আপডেট ভার্সন বাজারে আনে সফটওয়্যার কোম্পানিটি।
তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টাতে থাকে সেই ছবি। আরও আধুনিক মজিলা ফায়ারফক্স, অ্যাপলের সাফারি ও গুগলের ক্রম ব্রাউজারের দাপটে ক্রমেই জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার।
গত বছরের (২০২১) এক পরিসংখ্যানমতে, বিশ্বে মোট কম্পিউটার ব্রাউজার ব্যবহারকারীদের মাত্র ২ শতাংশ ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহার করেন। গুগল ক্রোম ব্যবহার করেন ৬৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ। আর অ্যাপলের সাফারি ব্যবহার করেন ১০ শতাংশ মানুষ।
এক পর্যায়ে অবস্থা এমনই দাঁড়ায় যে, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের একমাত্র ব্যবহার হয়ে দাঁড়ায় ক্রম বা ফায়ারফক্স ডাউনলোড করা। ২০১৬ সালে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের ব্রাউজিং ফিচারের আপডেট করা বন্ধ করে দেয় মাইক্রোসফট।
এর আগে ২০১৫ সালে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের বিকল্প হিসেবে এজ ব্রাউজার আনে তারা। ক্রমের সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে ব্রাউজারটির। মূলত এরপর থেকেই ধীরে ধীরে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার বন্ধ করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মাইক্রোসফট। ২০২১ সালের আগস্টে মাইক্রোসফট ৩৬৫ থেকে ব্রাউজারটির সাপোর্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। সূত্র: আল-জাজিরা ও ওয়াশিংটন পোস্ট।