জুম আর্থ লাইভ স্যাটেলাইটে ধরা পড়েছে পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের সবচেয়ে খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত বাংলাদেশের দীর্ঘতম এই সেতুতে রেললাইনও রয়েছে। এটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া, লৌহজংকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এর ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হলো। আজ শনিবার (২৫ জুন) মাওয়া পয়েন্ট থেকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তব্য শেষে টোল পরিশোধ করে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় যোগাযোগ প্রকল্প পদ্মা সেতুতে উঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাওয়া প্রান্তের টোল বুথে ঢুকে গাড়ির কাচ নামিয়ে নিজ হাতে টোলের নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করেন তিনি।
সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি জাতি যে কখনো মাথা নোয়ায় না, তার প্রমাণ পদ্মা সেতু। ভবিষ্যতেও আমরা মাথা নোয়াবো না। আমার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সেটাই হয়েছে। শত ষড়যন্ত্র আর অন্ধকার ভেদ করে অবশেষে আলোর মুখ দেখেছে পদ্মা সেতু।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই সেতু নির্মাণে জড়িতদের সবাইকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছেন, আজ এর উদ্বোধনের মাধ্যমে তাদের জবাব দিতে সক্ষম হয়েছি।
দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর নামফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, স্বপ্নের এই পদ্মা সেতুর জন্য বাজেট পাস হয় ২০০৭ সালে। তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। নকশা পরিবর্তন ও দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির কারণে ২০১১ সালে বাজেট বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে বাজেটে যুক্ত হয় আরও ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। চতুর্থ দফায় এই সেতুর বাজেট বৃদ্ধি পায় আরও ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। অবশ্য এখনো এই বাজেটের পুরোটা খরচ হয়নি বলে জানা গেছে। সেতুর খরচের মধ্যে রয়েছে- ভূমি অধিগ্রহণ, সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, পুনর্বাসন ও পরিবেশ এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের বেতন-ভাতা।