বাংলাদেশ ভবিষ্যতের আইটি খাতে পাওয়ার হাউজ হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সভাপতি রাসেল টি আহমেদ । মঙ্গলবার (২৮ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেসিস কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।
এ বিষয়ে রাসেল টি আহমেদ বলেন, বেসিসের সদস্য কোম্পানি এখন এক দশমিক চার বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করছে। এটাকে পাঁচ বিলিয়নে উন্নীত করতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্র্যান্ডিং ও বিদেশি বিনিয়োগের বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে ব্র্যান্ডিং ও বিনিয়োগের এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এবার আমরা ইউরোপের বাজারে তিনটি বড় অনুষ্ঠানে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, যুক্তরাজ্য ও স্লোভাকিয়ার অন্তত ৩৫০টি কোম্পানির সামনে বেসিস থেকে বাংলাদেশ- দ্য নেক্সট আইসিটি পাওয়ারহাউজ বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করা হবে। যেখানে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরা হবে। আমাদের সফলতার গল্পগুলো উপস্থাপন করা হবে। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং বেসিস সদস্য কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হবে। এছাড়া উক্ত দেশগুলোর তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনগুলোর সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে।
ইউরোপের তিনটি দেশ- অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও যুক্তরাজ্যে নানা আয়োজনে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিচ্ছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কোনো আয়োজনে টাইটেল স্পন্সর বা হেডলাইন পার্টনার হিসেবে নতুন মাইলফলক অর্জন করতে যাচ্ছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেসিস সাতটি স্তম্ভের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অধিকতর উৎকর্ষ সাধনের জন্য কাজ করছে। এর মধ্যে বিদেশি বাজারে শিল্পের প্রচার ও বিকাশ হচ্ছে অন্যতম দুটি স্তম্ভ। আর এ কারণেই ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রচার ও প্রসারে কোনো আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো টাইটেল স্পন্সর হিসেবে যুক্ত হওয়ার নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছে বেসিস।
বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরি হিমিকা বলেন, শুধু ইউকে বা ইউরোপ বাজার নয়, বিশ্বের অন্যান্য বাজারগুলোতেও আমাদের সদস্য কোম্পানিগুলো সফলতার সঙ্গে ব্যবসা করছে। এই সফলতাকে সামনে নিয়ে সব বাজার কীভাবে আরও সম্প্রসারণ করা যায়, সেই বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি।
বেসিস পরিচালক আহমেদুল ইসলাম বাবু বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও বেসিসের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা জোরালোভাবে কাজ করছি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জরিপে দেখা গেছে, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে প্রাধান্য দিচ্ছে। আমরা মনে করি, বেসিসের নতুন এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক বাজার আরও সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রচারণায় এবারের আয়োজনের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ জুন অস্ট্রিয়াতে, ১ জুলাই হাঙ্গেরিতে এবং ২ থেকে ৬ জুলাই যুক্তরাজ্য সফর করবেন বেসিস প্রতিনিধি দল। বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদের নেতৃত্বে এই সফরে থাকছেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরি হিমিকা এবং সহ-সভাপতি (প্রশাসন) আবু দাউদ খান।
যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে আগামী ৫ থেকে ৬ জুলাই গ্লোবাল সোর্সিং অ্যাসোসিয়েশনের একটি ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্ট ফেস্টিভ্যাল অব সোর্সিং অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর এই ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টের ‘হেডলাইন পার্টনার’ হয়ে প্রথমবারের মতো নতুন মাইলফলক রচনা করতে যাচ্ছে বেসিস। বেসিসের সঙ্গে পৃষ্ঠপোষকতায় থাকছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেসিসের আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি টি আই এম নুরুল কবীর ও অ্যাডভাইজরি স্থায়ী কমিটির সভাপতি এম রাশিদুল হাসান প্রমুখ।