চার হাজার চারশ কোটি ডলারের চুক্তি থেকে সরে যাওয়ায় টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করেছে টুইটার কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ ধনী মাস্ক যেন তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জনপ্রিয় এই সোশাল মিডিয়া কোম্পানির প্রতিটি শেয়ার ৫৪ দশমিক ২০ ডলারে কিনে নেন, সেই আদেশ চাওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ারের আদালতে দায়ের করা এ মামলায়।
সেখানে বলা হয়েছে, টুইটার কিনে নেওয়ার কথা বলে মানুষের মনোযোগ কেড়ে নিয়ে, এ বিষয়ে প্রস্তাব দিয়ে, তারপর টুইটার অধিগ্রহণের বিষয়ে একটি চুক্তি করে মাস্ক এখন মনে করছেন, তিনি বোধহয় অন্য সবার মত ডেলাওয়ারের চুক্তি আইন মানতে বাধ্য নন; তিনি ভাবছেন, মন চাইলেই তিনি সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলতে পারেন, একটা কোম্পানিকে ছুড়ে ফেলতে পারেন, এর কাজ তছনছ করে দিতে পারেন, শেয়ার হোল্ডারদের পথে বসাতে পারেন, তারপর চুক্তি থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন।
টু্ইটার ও ইলন মাস্ককে ঘিরে নাটকীয়তার শুরু হয়েছিল ৪ এপ্রিল। মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটির ৯.২ শতাংশ শেয়ার নিজের মালিকানায় থাকার আকস্মিক ঘোষণা দিয়ে প্রযুক্তি বাজারে আলোড়ন তোলেন মাস্ক; কয়েক দিনের জন্য হলেও কোম্পানির সবচেয়ে বেশি শেয়ারের মালিক ছিলেন তিনি।
বিশাল সংখ্যক শেয়ারের মালিক হওয়ায় মাস্ককে কোম্পানির পরিচালক পদে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল টুইটারের পরিচালনা পর্ষদ। প্রথমে সে প্রস্তাবে রাজি হলেও শেষ মুহুর্তে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন মাস্ক। বরং ১৪ এপ্রিল পুরো টুইটার কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বসেন তিনি।
ঘটনা প্রবাহের আকস্মিকতা আর মাস্কের খামখেয়ালি আচরণে নড়চড়ে বসা টুইটারের পরিচালনা পর্ষদ প্রথমে রাজি ছিল না। কিন্তু শেয়ারধারীদের চাপে তারা মাস্কের সাথে সমঝোতায় আসে। ২৫ এপ্রিল মাস্কের প্রস্তাব গ্রহণ করার ঘোষণা দেয় টুইটারের পরিচালনা পর্ষদ। চার হাজার চারশ কোটি ডলারে টুইটারের মালিকানা মাস্কের হাতে তুলে দেওয়ার চুক্তি হয়।
কিন্তু আড়াই মাস না যেতেই গত ৯ জুলাই একাধিক শর্ত ভঙ্গের কারণ দেখিয়ে মাস্ক সেই চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে দাখিল করা নথিপত্রে মাস্কের আইনজীবীরা দাবি করেন, শর্ত অনুযায়ী স্প্যাম আর ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা নিয়ে যথেষ্ট তথ্য দিতে টুইটার ব্যর্থ হয়েছে, আর সেটাই চুক্তি বাতিল করার মূল কারণ।
পাল্টা মামলায় টুইটার একগুচ্ছ অভিযোগ করেছে মাস্কের বিরুদ্ধে। সেখানে বলা হয়েছে, মাস্ক এখন চুক্তি বাতিল করতে চান, কারণ ওই চুক্তিতে তার ব্যক্তিগত স্বার্থ এখন আর পূরণ হচ্ছে না।
টুইটার চেয়ারম্যান ব্রেট টেইলর এক টুইটে বলেছেন, মাস্ক যে চুক্তি করেছেন, তা যেন তিনি মানেন, সেটা নিশ্চিত করতে চান তারা।