সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে মার্ক জাকারবার্গকে সরাতে চান বিনিয়োগকারীদের একটি দল। প্রতিষ্ঠানটির সিইও এবং পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে মার্ক জাকারবার্গের পরিবর্তে স্বতন্ত্র কোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেয়ার পক্ষে দলটি। খবর ম্যাশেবল।
১২ এপ্রিল সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনে জমা দেয়া এক নথিতে বিষয়টি উঠে এসেছে। ফেসবুকের সিইও এবং চেয়ারম্যান হিসেবে জাকারবার্গের ভূমিকা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই দ্বিমত পোষণ করে আসছেন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। বিশেষ করে টানা কয়েকটি বড় তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশের পর জাকারবার্গের ভূমিকা আরো বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
ফেসবুকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনে বিশ্বাসী বিনিয়োগকারীদের দাবি, স্বতন্ত্র বোর্ড চেয়ারের ঘাটতির কারণে অনেক ক্ষেত্রে ভুলভাবে পরিচালিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। একক সিদ্ধান্ত ফেসবুকের দুর্দশার প্রধান কারণ। ফেসবুকের কার্যক্রম ঘিরে বিতর্ক বাড়ছে। ব্যবহারকারীদের তথ্য বেহাতের ঝুঁকির পাশাপাশি শেয়ারহোল্ডারদের ব্যয় বাড়ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেসবুকে মার্ক জাকারবার্গের কর্তৃত্ব হ্রাস করতে চাইছেন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। নেতৃত্বে পরিবর্তনে বিশ্বাসীদের ভাষ্যে, ফেসবুকে জাকারবার্গের কর্তৃত্ব হ্রাসের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমটিকে ভবিষ্যতে বিতর্কে জড়ানো থেকে ঠেকানো সম্ভব।
বিনিয়োগকারীদের দাবি, ফেসবুক একক ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে চলছে। কিন্তু বাস্তবে প্রতিষ্ঠানটি তা নয়। এটি একটি বহুজাতিক কোম্পানি। প্লাটফর্মটির সঙ্গে কোটি কোটি মানুষের সম্পৃক্ততা। বড় পরিসরের একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সিইও এবং চেয়ারম্যান পদে আলাদা ব্যক্তি থাকা ভালো। এটি প্রতিষ্ঠানের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, পরিবর্তনে বিশ্বাসী বিনিয়োগকারী দলটির দাবি যৌক্তিক। ফেসবুকের নেতৃত্বে বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে। গত কয়েক বছরে অসংখ্য সতর্কবাণী এড়িয়ে গেছেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) শেরিল স্যান্ডবার্গ। ফেসবুক যখন সমস্যায় জর্জরিত, তখন প্রতিষ্ঠানটির এ দুই শীর্ষকর্তা নতুন একাধিক প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। যে কারণে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোস্যাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠানটিকে।
মার্ক জাকারবার্গ ও শেরিল স্যান্ডবার্গের দ্বৈত সিদ্ধান্তের কারণে ফেসবুকের ছোট ছোট সমস্যা এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। শুধু তা-ই নয়, ফেসবুকের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। যে কারণে ২০১৮ সালের পুরোটাই দুঃখ প্রকাশ করে কাটিয়েছেন মার্ক জাকারবার্গ।