ইউরোপের বাজারে উন্মোচনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে স্যামসাংয়ের নতুন ফোল্ডেবল ফোন। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্টটি জানায়, ২৬ আগস্ট ইউরোপের বাজারে গ্যালাক্সি জি ফ্লিপ৪ ও জি ফোল্ড৪ উন্মোচনের পর এখন পর্যন্ত ৩৬টি ইউরোপীয় দেশে বিস্তৃত হয়েছে। জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাজ্যসহ প্রায় সব ইউরোপীয় দেশে পাওয়া যাচ্ছে।
দ্য কোরিয়া হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম সপ্তাহে আগের সিরিজের ফোল্ডেবল ফোন থেকে নতুন সিরিজের বিক্রি প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে বলে জানান স্যামসাংয়ের কর্তাব্যক্তিরা। তবে বিক্রির উপাত্ত এখনই প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা।
ইউরোপের বাজারকে ফোকাস করে ফোল্ডেবল ফোনের বাজার সম্প্রসারণ করতে চায় স্যামসাং। বাজার বিশ্লেষক সংস্থা ওমদিয়ার উপাত্তে দেখা গিয়েছে, ২০২১ সালে ফোল্ডেবল ফোন সেগমেন্টে ৯০ শতাংশ হিস্যা ছিল স্যামসাংয়ের।
ডিসপ্লে সাপ্লাই চেইন কনসালট্যান্টের (ডিএসসিসি) সিইও রস ইয়াং জানান, দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের চাহিদা চাঙ্গা থাকলেও ইউরোপকে লক্ষ্য করে প্রবৃদ্ধির পরিকল্পনা স্যামসাংয়ের।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ফোল্ডেবল সেগমেন্টে প্রবেশ করছে শাওমি, অপো ও রিয়ালমির মতো চীনা ব্র্যান্ড। এমনকি বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপলও এ সেগমেন্টে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে।
২০২১ সালের জুলাইয়ের পর থেকেই টানা চার প্রান্তিকে ইউরোপের সার্বিক স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষস্থান স্যামসাংয়ের। সরবরাহ চেইন সংকটের কারণে ২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিক্রির অংকে শাওমির কাছে শীর্ষস্থান হারিয়েছিল স্যামসাং।
২০২০ সালে করোনার অভিঘাতে ইউরোপের স্মার্টফোন বাজার বেশ ধাক্কা খেলেও ২০২১ সালে বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সরবরাহ চেইন সংকট ও চিপস্বল্পতার মধ্যেও গত বছর ৮ শতাংশ সম্প্রসারণ হয়েছে ইউরোপের স্মার্টফোন বাজার।
গত বছর ইউরোপের স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে লড়াই তীব্রতর হয়েছে। শীর্ষ স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোয় বেশ কয়েকবার রদবদল হয়েছে। প্রথম ফাইভজি আইফোন উন্মোচনের মাধ্যমে ৩৪ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে ২০২১ শুরু করেছিল অ্যাপল। গত ফেব্রুয়ারিতে গ্যালাক্সি এস২১ সিরিজ উন্মোচনের ফলে ওই মাসে স্যামসাংয়ের বিক্রি বাড়ে ২৪ শতাংশ। এতে ইউরোপের বাজারে শীর্ষ ব্র্যান্ড হিসেবে অবস্থান পুনরুদ্ধার করে তারা। কিন্তু মে মাসে ভিয়েতনাম কারখানায় কয়েক সপ্তাহ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অবস্থান হারায় তারা। এতে জুনে প্রথমবারের মতো ইউরোপের বাজারে শীর্ষ স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হয়ে দাঁড়ায় শাওমি।
চীনা ব্র্যান্ডটির চমকের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে রাশিয়া, স্পেন ও ইতালির মতো বাজারে রেকর্ড স্মার্টফোন বিক্রি। ইউরোপের বাজারে শীর্ষস্থানে অবশ্য মাত্র এক মাস ছিল শাওমি। জুলাইয়ে এ সিরিজের ফোনের মাধ্যমে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করে স্যামসাং। গ্যালাক্সি জি ফোল্ড৩ ও ফ্লিপ৩ ফোনের মাধ্যমে পরবর্তী কয়েক মাস শীর্ষস্থান ধরে রাখে দক্ষিণ কোরীয় স্মার্টফোন জায়ান্টটি। অ্যাপলের আইফোন ১৩ উন্মোচনের পর ২০২১ সালের শেষ তিন মাসে প্রিমিয়াম সেগমেন্টে শীর্ষস্থান ধরে রাখে অ্যাপল।