কাজের সুবাদে অফিসিয়াল পিসিতে বিভিন্ন সাইট ভিজিট করতে হয়। কিন্তু অনেক সময়ই অনেকেই প্রয়োজনের বাইরেও লুকিয়ে অনেক কাজ করে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এসব কাজ আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অফিস ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু উইটম্যান বলেন, ‘অফিসের কম্পিউটারে আপনি কী করছেন, তাতে আপনার আইটি ডিপার্টমেন্টের সহকর্মী নজরদারি চালাতে পারে। তাই অফিসে সচেতন থাকতে হবে প্রতিটি ক্লিক, সার্চ, ই-মেইল, ব্যক্তিগত কাজ, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওয়েবসাইট ভিজিটে।’
বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাউজিং হিস্ট্রি মুছে ফেললেও ব্রাউজিং হিস্ট্রি জানা সম্ভব। যে সব সাইট ব্রাউজিং এ সতর্ক থাকতে হবে।
আপত্তিকর সাইট: অফিসে বসে এই গর্হিত কাজ করার অভ্যাস থাকলে এক্ষুন পরিত্যাগ করুন। তা না হলে নিশ্চিত বিপদের হাত থেকে রক্ষা পাবেন না।
ব্যক্তিগত ব্যবসার সাইট: মিশেল কের বলেন, ‘বহুসংখ্যক কর্মচারী বরখাস্ত হয়েছেন চাকরির সময় ব্যক্তিগত ব্যবসায় সময় দিতে গিয়ে কর্মকর্তার কাছে ধরা খেয়েছেন।’ তাই যদি অফিসের পিসিতে আপনার ব্যবসায়িক কোন ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
চাকরি খোঁজার সাইট: ক্যারিয়ার কোচ রাইয়ান খান বলেন, ‘যেহেতু অফিসের সমস্ত কাজ কর্মকর্তার নজরদারিতে থাকে, তাই এসব সাইট ব্রাউজ করলে আপনি অসুবিধায় পড়তে পারেন, এমনকি আপনার চাকরিও চলে যেতে পারে।’
ডেটিং সাইট: অফিস নিশ্চয়ই ডেটিং সাইটে ঢুঁ মারার জন্য আপনাকে মাসে মাসে পারিশ্রমিক দেয় না। তাই আপনি বিবাহিত বা অবিবাহিত যাই হোন না কেন, অন্তত অফিসিয়ালি এই কাজ করবেন না।
স্ট্রিমিং ও ডাউনলোড: অফিসের পিসি ব্যবহার করে কোন সিনেমা বা ভিডিও ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকুন। কারন, এসে অফিসের সব পিসির উপর ব্যান্ডউইথ চাপ পড়ে যা কখনোই কাম্য নয়।
ভ্রমণ, শপিং, বিয়ে সংক্রান্ত সাইট: টিনা নিকোলাই বলেন, ‘অফিসের কর্মকর্তা কখনোই চাইবেন না যে, কাজের সময়টা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করবেন।’ তিনি বলেন, ‘বিয়ে, পার্টি কিংবা ছুটিতে আপনি কী করবেন, সে পরিকল্পনা অফিসে করা বাদ দিন।’ এসব সাইট ভিজিট বা সার্চ বাদ দিয়ে কাজ সংক্রান্ত চিন্তা করুন, যা আপনার জন্য সুফল বয়ে আনবে।
অভিযোগ করা: সবাই যার যার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে চায়। কিন্তু এটা অফিসে নয়, বাসায় গিয়ে করুন। কর্মীরা যখন কাজের ক্ষেত্র নিয়ে অভিযোগ করেন, তারা অনেক বড় ভুল করেন। অফিস নিয়ে যদি অভিযোগ করতেই হবে তবে সহকর্মী কিংবা বসকে নয়, অফিসের বাইরে কারো সাথে বসে অভিযোগ করুন।
মোবাইলে গেম খেলা: কর্মীদের করা অন্যতম ভুল হলো তারা অফিসে বসে মোবাইলে গেম খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এই অভ্যাস বাদ দিন। কাজে মনোযোগ দিন। আপনাকে যে যে টার্গেট লাইন দেয়া হয়েছে, সেদিকে পুরোপুরি মনোনিবেশ করুন। গেমে একেকটি লেভেল পার না করে জীবনের লেভেলগুলো কীভাবে মেধার সাথে অতিক্রম করা যায়, সেটি নিয়ে ভাবুন।
পোশাকের দিকে খেয়াল না করা: দিন শুরু হওয়ার আগেই চিন্তা করুন আপনি কেমন পোশাক পরে, কেমন অভিব্যক্তি নিয়ে অফিসে যাবেন। এটি কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। অবশ্য তার মানে এই না যে আপনাকে খুব দামী পোশাক পরে অফিসে যেতে হবে। আপনার যেমন পোশাক আছে সেটিকেই খুব যত্ন করে গুছিয়ে পরুন। আপনার পোশাক এবং বাহ্যিক দিকই কিন্তু আপনার ভেতরের অভিব্যক্তির পরিচয় দেবে।
মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করা: আপনি যদি কম্পিউটারের মাউসের চেয়েও হাতের মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার করেন, তবে বুঝতে হবে যে আপনার মধ্যে কোনো সমস্যা আছে। আপনি ঠিকমতো কাজ করছেন না কিংবা কাজে মনোযোগ দিচ্ছেন না। ভুলগুলো এখনই শুধরে ফেলুন এবং আপনার লক্ষ্যের দিকে মনোনিবেশ করুন। শুভকামনা আপনার জন্যে।