“গ্রাহক যখন তার ডিভাইসে লোকেশন ডেটা শেয়ার না করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তাদের এই ভরসা থাকা উচিত যে কোম্পনিটি তাদের পদক্ষেপ অনুসরণ করবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের ৪০টি অঙ্গরাজ্যে লোকেশন ট্র্যাকিং সম্পর্কিত বিভিন্ন মামলা নিষ্পত্তিতে প্রায় ৩৯ কোটি এক লাখ ৫০ হাজার ডলার জরিমানা গুনতে হবে টেক জায়ান্ট গুগলকে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরের জানানো এই তথ্য বিষয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, অরিগন ও নেব্রাস্কার নেতৃত্বাধীন সোমবারের এই তদন্ত ও নিষ্পত্তি, এই টেক জায়ান্টের আইনি মাথাব্যথা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কোম্পানির ‘ইউজার ট্র্যাকিং’ সম্পর্কিত বিভিন্ন অনুশীলনকে কঠোর তদন্তের আওতায় এনেছে অঙ্গরাজ্যদুটি।
“এই জরিমানার পাশাপাশি, লোকেশন ট্র্যাকিং প্রশ্নে গুগলকে অবশ্যই গ্রাহকের কাছে স্বচ্ছ হতে হবে ও ওয়েব পেইজে এ সম্পর্কিত সকল তথ্য বিস্তারিত আকারে জানাতে হবে।” –বলেছেন আইওয়া অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল।
“গ্রাহক যখন তার ডিভাইসে লোকেশন ডেটা শেয়ার না করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তাদের এই ভরসা থাকা উচিত যে কোম্পনিটি তাদের পদক্ষেপ অনুসরণ করবে না।”
“এই নিষ্পত্তি নিশ্চিত করে, গ্রাহকদের ট্র্যাক এবং অঙ্গরাজ্য ও ফেডারেল প্রাইভেসি আইন মেনে চলার বিষয়ে যেন অবশ্যই স্বচ্ছ থাকে কোম্পানিগুলো।”
“সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা যে উন্নতি করেছি তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা এই তদন্তের নিষ্পত্তি করেছি, যা কয়েক বছর আগে পরিবর্তিত পুরানো পণ্য নীতিমালার উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছি আমরা।” –বলেছেন গুগল মুখপাত্র হোসে কাসতানেডা।
সোমবার এক ব্লগ পোস্টে গুগল বলেছে, লোকেশন ডেটা প্রশ্নে তুলনামূলক বেশি নিয়ন্ত্রণ ও স্বচ্ছতা প্রদানে আসন্ন মাসগুলোতে বেশ কিছু আপডেট আনবে তারা।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওইসব পরিবর্তনের মধ্যে আছে লোকেশন ডেটা মোছার সহজ উপায়। নতুন ব্যবহারকারীর কাছে থাকবে ‘অটো-ডিলিট কন্ট্রোল’ সুবিধা, যেটির মাধ্যমে তারা গুগলকে কয়েকটি বিশেষ তথ্য মোছার ‘আদেশ দিতে’ পারবেন।
ব্যবহারকারীর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গুগলের লোকেশন ডেটা রেকর্ডের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৮ সালে একটি তদন্ত কার্যক্রম চালু করেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা।
তদন্তে উঠে আসে, গ্রাহক সুরক্ষা আইন উপেক্ষা করে অন্তত ২০১৪ সাল থেকে লোকেশন-ট্র্যাকিং অনুশীলন নিয়ে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করেছে গুগল।
২০২২ সালের অক্টোবরে গুগলের বিরুদ্ধে একই ধরনের একটি মামলা দায়ের করে অ্যারিজোনা, যেটির নিষ্পত্তি হয়েছে সাড়ে আট কোটি ডলারে।
জানুয়ারিতে গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করে টেক্সাস, ইন্ডিয়ানা, ওয়াশিংটন এবং ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া। তাদের অভিযোগ ছিল, ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি লঙ্ঘন করে বিভ্রান্তিকর লোকেশন-ট্র্যাকিং অনুশীলন চালাচ্ছে গুগল।
এই বছরের প্রথমার্ধে বিজ্ঞাপন খাত থেকে সর্বমোট ১১ হাজার একশ কোটি ডলার আয় করেছে গুগল, যা বাজারের অন্যান্য অনলাইন বিজ্ঞাপন বিক্রেতার চেয়ে বেশি।
ডিজিটাল জটিলতার যুগে গ্রাহকের মনোযোগ আকর্ষণে বিজ্ঞাপনকে বেশি প্রাসঙ্গিক করতে ও বিজ্ঞাপনদাতাকে সুবিধা দিতে গুগলের অন্যতম অস্ত্র হচ্ছে গ্রাহকের অবস্থানবিষয়ক তথ্য।