দেশে পর্ণগ্রাফি, অপপ্রচার, হুমকি, উগ্রবাদসহ নানা ধরনের সাইবার অপরাধ বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রতি ১শ’ জনের মধ্যে ৮১ জনই কোনো না কোনোভাবে শিকার হচ্ছেন সাইবার অপরাধের। এদের মধ্যে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন না ৫৫ শতাংশ ভুক্তভোগী।
সাইবার অপরাধের শীর্ষে সামাজিক মাধ্যম, অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, বুলিং,পর্ণগ্রাফিসহ ১৩ ধরণের অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে- যা দিন দিন বিষফোঁড়া হয়ে উঠছে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে তরুণরাই যেখানে অগ্রগামী, অপরাধীরা টার্গেট করছে তাদেরকেই। বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে, গেল বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়েছে এইসব হয়রানী ও অপরাধ।
১৮ থেকে ৩০ বছরের বয়সীদের সঙ্গে গত বছরের তুলনায় অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ৫ শতাংশ বেশি। সমস্ত অপরাধের চিত্রে পুরুষ ভুক্তভোগী ৪৩ দশমিক ২২ শতাংশ হলেও নারী ভুক্তভোগী ৫৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগে এ সংক্রান্ত বিষয় অবগত না হওয়া এবং সামাজিক মাধ্যমসহ ইন্টারনেট ব্যবহারে শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব রয়েছে ব্যবহারকারীদের।
সাইবার ক্রাইম অ্যাক্টিভিস্ট জেনিফার আলম বলেন, “আমাকে জানতে হবে অনলাইনে আমি কিভাবে নিরাপদে থাকবো। আপনি যদি কোনো অবস্থায় সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়েছেন বলে মনে করেন তাহলে প্রথমে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যেতে হবে।”
সাইবার অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দিনে ৪০ থেকে ৪৫টি মামলা হচ্ছে। আর অপরাধ দমনে কাজ করছে পুলিশের ৪টি ইউনিট ও দুটি মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অপরাধ প্রবণতার ধরণ নিয়ে বলছেন এই বিশেষজ্ঞ।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তপনকান্তি সরকার বলেন, “সবচেয়ে বেশি সাইবার ক্রাইম হয় আমেরিকায়। তাদেরটা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের। অর্থনীতি যতো বড় হবে তার একটা পার্সেন্টেস এর মধ্যে থাকবে। ডিজিটালের সুবিধাগুলো যদি নিতে হয় আমাদেরকে আরও স্মার্ট হতে হবে। প্রোটেকশন ও সিকিউরিটি কন্ট্রোলগুলো আমাদের জানতে হবে।”
সাইবার সচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাইবার পাঠ অন্তর্ভুক্ত, গণমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করাসহ জাতীয় বাজেটে সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ দেয়ার পরামর্শও আছে বিশেষজ্ঞদের।
তপনকান্তি সরকার বলেন, “যখন গ্লোবাল ওয়ার্ল্ডে বাস করবেন তখন ধরে নিতে হবে এখানে কিছু মিস অ্যাপেলিং হবে। এগুলোর ভয়ে পিছিয়ে থাকলে হবে না। এগুলো ওভারকাম করে এগিয়ে যেতে হবে। প্রান্তিক জনপথের মানুষকে কিভাবে প্রোটেক করতে পারবো এই ট্রেনিংগুলো দিতে হবে।”
ইউটিউবে অশ্লীল ছবি প্রদর্শন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে উগ্র ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য প্রচার করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানো বন্ধ করতেও সরকারকে কঠোর হবার তাগাদা সংশ্লিষ্টদের।