বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা চলছে প্রযুক্তি অঙ্গনে। একদিকে শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো থেকে লাখ লাখ কর্মী ছাঁটাই, অপরদিকে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি।
আর এ দুইয়ের যোগফলে স্মার্টফোন বাজারে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্রয় ধসের ঘটনা ঘটেছে গেল প্রান্তিকে। অথচ ছুটির মৌসুমে স্মার্টফোনের চাহিদা থাকে বরাবরই বেশি। কিন্তু ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে স্মার্টফোন বিক্রিতে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অবনমন ঘটেছে।
২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রির হিসাব প্রকাশ করেছে বাজার বিশ্লেষক সংস্থা দি ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশন (আইডিসি)। সেখানে দেখা যায়, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ৩০ কোটি ৩ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন বাজারজাত করেছে; যা ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ কম।
আইডিসির গবেষণা পরিচালক নাবিলা পোপাল জানান, আগের কোনো প্রান্তিকেই তারা ছুটির মৌসুমে এত কম স্মার্টফোন বাজারজাতের রেকর্ড দেখতে পাননি। গ্রাহক চাহিদা ও বাজার পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় বিক্রেতারাও ডিভাইস সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দিয়েছেন।
আইডিসির তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের শেষে বাজারের যে নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি চলতি বছরের পুনরুদ্ধার হার ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। আর্স টেকনিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের সেরা পাঁচ স্মার্টফোন বিক্রেতা কোম্পানি হলো অ্যাপল, স্যামসাং, শাওমি, অপো ও ভিভো।
আর্স টেকনিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের সেরা পাঁচ স্মার্টফোন বিক্রেতা কোম্পানি হলো অ্যাপল, স্যামসাং, শাওমি, ওপো ও ভিভো। এ ধসের সবচেয়ে কম প্রভাব পড়েছে অ্যাপলের ওপর। চতুর্থ প্রান্তিকে এ আইফোন নির্মাতা কোম্পানির বিক্রি কমেছে ১৪ দশমিক নয় শতাংশ। আর স্যামসাংয়ের বেলায় তা ১৫ দশমিক ছয় শতাংশ। তবে, সাড়ে ২৬ শতাংশ বিক্রি কমায় বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে শাওমি।
২০২২ সালে স্মার্টফোন বাজারের ২১ দশমিক ছয় শতাংশ শেয়ার নিয়ে শীর্ষস্থান স্যামসাংয়ের দখলে। ১৮ দশমিক আট শতাংশ শেয়ার নিয়ে অ্যাপলের অবস্থান দ্বিতীয়। আর ১২ দশমিক সাত শতাংশ শেয়ার নিয়ে তৃতীয় স্থান দখল করেছে শাওমি।
আইডিসি আরও বলছে, গ্রাহকরা আগের তুলনায় দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন ধরে রাখছেন। বেশিরভাগ প্রধান বাজারে নতুন স্মার্টফোন কিনতে গ্রাহকরা সময় নিচ্ছেন ৪০ মাস।
আইডিসির আরেক গবেষণা পরিচালক অ্যান্থনি স্কারসেল বলেন, ২০২৩ সাল একটি সতর্কতার বছর হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, বিক্রেতারা নিজেদের ডিভাইসের পোর্টফোলিও পুনর্বিবেচনা করবেন। আর সরবরাহের চ্যানেলগুলোও অতিরিক্ত পণ্য মজুদের আগে দুবার চিন্তা করবে।