বর্তমানে স্মার্টফোন ছাড়া একটি মুহূর্তও কল্পনা করা যায় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহারের অভ্যাস কম-বেশি অনেকেরই আছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, গেমিং ইত্যাদি অনেকের নেশায় পরিণত হয়। আর এটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দীর্ঘ সময় মোবাইল ব্যবহারের ফলে স্পন্ডিলাইটিস, ওবেসিটি, চোখের সমস্যা ইত্যাদি হতে পারে। এছাড়াও ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’তে আক্রান্ত হতে পারেন। ২৯ বছর বয়সী তরুণী ফেনেলা ফক্স এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
ফেনেলা ফক্স একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সর। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজারেরও বেশি। দিনের ১৪ ঘণ্টা সময় তিনি মোবাইলে ইনস্টাগ্রামে কাজ করতেন। দীর্ঘ সময় মোবাইল ব্যবহারের কারণে তিনি ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’তে আক্রান্ত হয়েছেন। চলাফেরার জন্য এখন হুইলচেয়ারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে তাকে।
২০২১ সালে প্রথমদিকে ফেনেলা ফক্সের শরীরে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। মাথা ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গগুলো সাধারণ সমস্যা মনে করে তেমন গুরুত্ব দেন না। এই ব্যথাগুলো ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারণ করে। এরপর অবস্থার অবনতি শুরু হয়। বমি ভাব, মাথা ঝিমঝিম করা ইত্যাদি দেখা দেয়। তখন চিকিৎসকদের কাছে জান তিনি। তখন তিনি জানতে পারেন যে, তিনি ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’তে আক্রান্ত।
মস্তিষ্কের যে অংশ বা ভেস্টিবুলারের যে স্নায়ু শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে, সেখানে কোনো সমস্যা হলে ভার্টিগোর লক্ষণ প্রকাশ পায়। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহারের কারণে ফেনেলার ক্ষেত্রে এই সমস্যা হয়েছে। ভার্টিগোর ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পর উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘুরে যায়, একটানা মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে শারীরিক অস্বস্তি শুরু হয়, তারপর বমি বমি ভাব দেখা দেয়। এমনকি এর ফলে কানের ভিতরের অংশে সংক্রমণও হতে পারে।
এই প্রসঙ্গে ফেনেলা ফক্স বলেন, ‘ঘুম থেকে জেগে আবার না ঘুমানো পর্যন্ত আমি মোবাইলে স্ক্রলিং করেছি। আমি বুঝতে পারিনি যে আমি নিজেই নিজের শরীরকে আরও অসুস্থ করে ফেলছি। হঠাৎ বুঝতে পারি যে আমি ঠিকভাবে হাঁটতে পারছি না। অসুস্থ বোধ করছিলাম। মাথা ঘুরতে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মুঠোফোনটি বন্ধ করে আলমারির পেছনে ফেলে দিয়েছিলাম। পরে সেটি মা-বাবাকে দিয়ে বলেছিলাম, আমি চাইলেও যেন এটি আমাকে না দেওয়া হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে আমি আবার হাঁটার শক্তি ফিরে পাই।’
‘ডিজিটাল ভার্টিগো’তে আক্রান্ত ফেনেলা ফক্স চলাফেরার জন্য হুইলচেয়ার ব্যবহার করেন। তখন তিনি মোবাইল ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেন। এরপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।