প্রযুক্তির উন্নয়নের যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশও হচ্ছে। চিপ উৎপাদন থেকে শুরু করে অনেক খাতে এ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। আর এদিক থেকে বিশ্ববাজারে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় এনভিডিয়া অনেকটাই এগিয়ে। প্রযুক্তিবিদ ও বিশ্লেষকদের ধারণা প্রতিষ্ঠানটি হয়তো ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে।
কোম্পানির শেষ প্রান্তিক প্রতিবেদনের তথ্যে এমন ধারণাই পাওয়া যাচ্ছে। এ প্রযুক্তি নিয়ে বছরের পর বছর কাজ করা একমাত্র কোম্পানি না হলেও, অন্যান্য চিপ নির্মাতা কোম্পানির মধ্যে এনভিডিয়াই বিজয়ীর কাতারে রয়েছে। কেননা প্রতিষ্ঠানটি অন্যদের চিপ সরবরাহ করে থাকে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, প্রযুক্তি শিল্পে বর্তমানে বিনিয়োগের অন্যতম জায়গা হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। যদিও গত বছর এ খাতে ব্যাপক কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। পরীক্ষামূলক বিভিন্ন উদ্যোগেও পিছিয়ে গেছে এটি।
গত সপ্তাহে এনভিডিয়ার প্রান্তিক প্রতিবেদনেও এর প্রতিফলন হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফল দেখিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি ওয়াল স্ট্রিটের প্রত্যাশাও ছাড়িয়ে গেছে। এর বিপরীতে চিপ নির্মাতা ইনটেল ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি নিজেদের লভ্যাংশও হারিয়েছে।
২৩ ফেব্রুয়ারি এনভিডিয়ার প্রতি শেয়ারমূল্য প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়ে ২৩৬ দশমিক ৭ ডলারে উত্তীর্ণ হয়েছে। বছরান্তে কোম্পানির শেয়ারমূল্য বেড়েছে ৬০ শতাংশ। ফিলাডেলফিয়া সেমিকন্ডাক্টর ইনডেস্কের তথ্যানুযায়ী, এটি লাভের প্রায় তিন গুণ। মূলত বিভিন্ন কম্পিউটারের জন্য গ্রাফিকস চিপ তৈরির মাধ্যমে বাজারে আত্মপ্রকাশ করে এনভিডিয়া। ধীরে ধীরে গেমের উপস্থাপন বাস্তবসম্মত হতে শুরু করে। গেমিং থেকে ক্রিপ্টো খাতেও এনভিডিয়া প্রবেশ করে। মূলত মাইনিংয়ের কাজে এনভিডিয়ার গ্রাফিকস কার্ডের সক্ষমতা ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এআই তৈরির দিকে জোর দিচ্ছে কোম্পানিটি।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট (জিপিউ) বাজারের প্রায় ৮০ শতাংশই এনভিডিয়ার নিয়ন্ত্রণে। আর এটি কোম্পানির সাফল্যের চাবিকাঠি অন্যতম মূলমন্ত্র। এ ‘বিশেষ’ চিপ মাইক্রোসফট সমর্থিত সফটওয়্যার কোম্পানি ওপেনএআইয়ের জনপ্রিয় চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতেও প্রয়োজনীয় কম্পিউটিং ক্ষমতা প্রদান করে।
এআই কম্পিউটিংয়ে ব্যবহৃত নির্দিষ্ট ধরনের গণিত দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার উদ্দেশ্যে নকশা করা হয়েছে গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট। অন্যদিকে ইনটেলের সাধারণ সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (সিপিইউ) তুলনামূলক কম দক্ষতায় বিভিন্ন কম্পিউটিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।
গবেষণা কোম্পানি গার্টনার বলছে, প্রযুক্তি শিল্পের দখল নিয়ে নিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর ২০২৬ সাল নাগাদ বিভিন্ন ডাটা সেন্টারে জিপিইউর মতো বিশেষ চিপ ব্যবহারের সম্ভাবনা ১৫ শতাংশের বেশি, যা ২০২০ সালেও ৩ শতাংশের নিচে ছিল।
মার্কিন বিনিয়োগ কোম্পানি পাইপার স্যান্ডলারের বিশ্লেষক হার্ষ কুমার বলেন, ‘হার্ডওয়্যার ও প্রক্রিয়াকরণে এআই বিপ্লবের নেতৃত্ব দিচ্ছে এমন দুটি কোম্পানি হলো এনভিডিয়া ও এএমডি। আমাদের মতে, এ দুটি কোম্পানিই সবার ওপরে রয়েছে।’