মাত্র ২ হাজার ৫০০ টাকা ডাউনপেমেন্ট দিয়ে কিস্তি সুবিধায় ওয়ালটন প্লাজা থেকে একটি স্মার্টফোন কিনেছিলেন নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার ভাবলা গ্রামের কৃষক জালাল ফরাজী। ১টি কিস্তি পরিশোধের পর অসুস্থতাজনিতকারণে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এ প্রেক্ষিতে অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন প্লাজা। বাকি সব কিস্তি মওকুফ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরিবারকে দেয়া হয়েছে আর্থিক সহায়তা। ওয়ালটন প্লাজার ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতির’ আওতায় এই সুবিধা পেয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, কিস্তিতে পণ্য কেনা ক্রেতাদের জন্য ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’ নামে যুগান্তকারী এক উদ্যোগ নিয়েছে ওয়ালটন প্লাজা। এর আওতায় দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে পণ্য ক্রয়কারীদের কিস্তি সুরক্ষা কার্ড দেওয়া হচ্ছে। কিস্তি চলমান থাকা অবস্থায় ক্রেতার মৃত্যু হলে পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ এবং তার পরিবারের কোনো সদস্য মৃত্যুবরণ করলে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা দিচ্ছে ওয়ালটন প্লাজা। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পণ্যের অনাদায়ী কিস্তির টাকা সমন্বয়ের পর অবশিষ্ট টাকা ক্রেতা বা তার পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল, ২০২৩) উপজেলার ভাবলা নতুন বাজার এলাকায় মৃত জালাল ফরাজীর স্ত্রী লাভলী বেগমের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন ওয়ালটনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। সেসময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের ডিভিশনাল ক্রেডিট ম্যানেজার সুমন চন্দ্র বসাক, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার নূরে আলম সিদ্দিকী, রিজিওনাল ক্রেডিট ম্যানেজার তানভীর হোসাইন ও দেলোয়ার হোসাইন, ওয়ালটন প্লাজার ব্র্যান্ড ম্যানেজার ওয়াহিদুজ্জামান, বেলাবো প্লাজা ম্যানেজার সোহেল রানা এবং অন্যান্য ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
জানা গেছে, পরিবারসহ বেলাবোতে বসবাস করতেন জালাল ফরাজী। পেশায় কৃষক জালাল গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তি সুবিধায় ‘প্রিমো জিএইচ১১’ মডেলের স্মার্ট ফোনটি কেনেন। তার কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা কার্ড নাম্বার ৬৬৩০২৪৬৮৫৩৬২১০৮০। চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি মারা যান তিনি। ১ মেয়ে ও ২ ছেলেসহ ৫ সদস্যের পরিবার তাদের। কিডনির ডায়ালাইসিস চিকিৎসা চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন জালালের পরিবার। যারফলে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে পরিবার।
এ অবস্থায় ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’র আওতায় মৃত গ্রাহকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন প্লাজা। মৃত কিস্তি ক্রেতা জালালের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এর থেকে কিস্তির অবশিষ্ট ৮ হাজার ৭৮২ টাকা পরিশোধের পর পরিবারটি পেয়েছে নগদ ৪১ হাজার ২১৮ টাকা।
ওয়ালটনের কিস্তি ক্রেতা সুবিধার বিষয়টি আগে থেকে জানতেন না লাভলী বেগম। স্বামী মারা যাওয়ার পর প্লাজার কর্মকর্তাদের কাছেই এসব বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। ক্রেতা মারা যাওয়ায় কিস্তি মওকুফ করে উল্টো পরিবারকে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়টিতে অবাক লাভলীর পরিবার। প্রতিটি কোম্পানির এমনভাবেই ক্রেতার পাশে থাকা উচিৎ বলে মন্তব্য করেন লাভলী বেগম। এমন অসহায় পরিস্থিতিতে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ওয়ালটন প্লাজার ব্র্যান্ড ম্যানেজার ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ক্রেতা মারা গেলে কিস্তি মওকুফসহ আর্থিক সহায়তা দেয়া ওয়ালটন প্লাজার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিশ্বে এমন উদ্যোগের উদাহরণ কেবল ওয়ালটন প্লাজা। কিস্তিতে পণ্য কিনে কিস্তি পরিশোধের আগে মারা গেলেও পণ্যের কোনো দায়ভার গ্রহণ করতে হয় না পরিবারের সদস্যদের। ক্রেতাদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের জন্য আমাদের এ উদ্যোগ।