রমজান উপলক্ষে গাজীপুরের চন্দ্রায় অবস্থিত ওয়ালটন হাই-টেক কারখানায় প্রতিদিন প্রায় ১৩ হাজার মানুষ ইফতার করে থাকেন। অন্যদিনের মতো গতকাল রবিবারও প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। ইফতার গ্রহণের সময় পাঁচজন শ্রমিক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মূল ডাইনিংয়ের বাইরে শরবত জাতীয় পানীয় তৈরি করে পান করেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই পাঁচজনের মধ্যে তিনজন অসুস্থবোধ করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। তিন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় আজ সোমবার একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ওয়ালটন।
প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, রবিবার (১৬ এপ্রিল) প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। ইফতারের সময় ৫ জন শ্রমিক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শরবত জাতীয় পানীয় তৈরি করে পান করেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই ৫ জনের মধ্যে ৩ জন অসুস্থবোধ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ওয়ালটনের মেডিক্যাল টিম তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে কারখানার নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে করে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় ওই তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে আরো একজন শ্রমিক অসুস্থবোধ করলে তাকেও জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার সুচিকিৎসার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, তিন সদস্যের এমন মৃত্যুতে ওয়ালটন পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। তাদের অকাল প্রয়াণ ওয়ালটন পরিবারের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ উক্ত শ্রমিকদের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। একইসঙ্গে কম্পানির পক্ষ থেকে যে খাবার সরবরাহ করা হয়, তা ব্যতিরেকে অন্য খাবার গ্রহণ না করার জন্য ওয়ালটনের সকল সদস্যকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
পাশাপাশি অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ ১ দিনের শোক দিবস ঘোষণা করেছে। এ উপলক্ষে আজ সোমবার (১৭ এপ্রিল) কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে ইফতার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে ওয়ালটন কারখানার তিন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন অন্য শ্রমিকরা।