সেলফোনের বাজারে বর্তমানে দুটি অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। একটি অ্যান্ড্রয়েড, আরেকটি আইওএস। এর বাইরে টাইজেন, কাইওএসসহ আরো কয়েকটি সিস্টেম চেষ্টা চালালেও সেভাবে বাজারে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। তবে শিগগিরই তৃতীয় স্থান দখলে নেবে হুয়াওয়ের হারমনি অপারেটিং সিস্টেম।
২০১৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে হারমনি অপারেটিং সিস্টেম বাজারে আনে হুয়াওয়ে। সে সময় থেকে চীনের বাজারে থাকা ডিভাইসগুলোয় এ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে। সম্প্রতি নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চ। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চীনে হারমনি ওএসের বাজার ৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এর মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএসের পর তৃতীয় স্থান দখলে নিয়েছে হারমনি।
২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে বিক্রি বছরওয়ারি হিসেবে ১৪ শতাংশ কমেছে। তবে এ সময় অ্যান্ড্রয়েডের তুলনায় আইওএস বাজারে ভালো অবস্থানে ছিল। গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এ সময়ের মধ্যে হারমনি ওএস দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্ববাজারে অপারেটিং সিস্টেমটির বাজার হিস্যা ছিল ২ শতাংশ। তবে চীনের বাজারে তা ৮ শতাংশের বেশি।
২০২২ সালে অ্যান্ড্রয়েড সেগমেন্টের জন্য চীন সবচেয়ে বড় অবদানকারী হিসেবে ছিল। ফ্ল্যাগশিপের বাজারের তুলনায় সামষ্টিক অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে লো-এন্ড বা কম দামের বাজার বেশি প্রভাবিত হয়েছে। আর এসব বিষয় গত বছর অ্যান্ড্রয়েডের বাজারে প্রভাব বিস্তার করেছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অবস্থান বাড়াতে অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএসের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলমান। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আইওএস সাময়িক সময়ের জন্য ৫২ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে শীর্ষে উঠে আসে। এছাড়া ভারতের বাজারেও অ্যাপলের জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
হুয়াওয়ে টেক কোম্পানি লিমিটেড ২০১৯ সালে হারমনি অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করেছে। গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপলের আইওএসের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য এটি বাজারে আনা হয়। হুয়াওয়ের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হওয়ার পর হারমনি ওএস আরো এগিয়ে যায়। নিষেধাজ্ঞার কারণে কোম্পানিটি অ্যান্ড্রয়েডসহ যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত অন্যান্য সফটওয়্যার ব্যবহারের সুযোগ হারায়। আর এর মাধ্যমে চীনের বাজারে হারমনির ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা ক্রমাগত বাড়তে থাকে।
হারমনিওএস একাধিক ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে কাজ করতে সক্ষম। এর মধ্যে সেলফোন, ট্যাবলেট, স্মার্টওয়াচ, স্মার্ট টিভিসহ অন্যান্য আইওটি ডিভাইসও রয়েছে। এটি মাইক্রোকার্নেল অবকাঠামোর ওপর তৈরি। যে কারণে এটি ব্যবহার করা প্রচলিত মোনোলিথিক কার্নেলের তুলনায় আরো বেশি সহজ। মাইক্রোকার্নেল ডিজাইনের কারণে এটি আরো বেশি নিরাপদ এবং অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের মতো ক্র্যাশ করে না।
হারমনিওএসের অন্যতম একটি ফিচার হলো এর ডিস্ট্রিবিউটেড আর্কিটেকচার। এটি একাধিক ডিভাইসকে একসঙ্গে কাজ করতে সহায়তা করে। এর অর্থ হচ্ছে ব্যবহারকারীরা কোনো সমস্যা ছাড়াই একাধিক ডিভাইসের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবে।
হুয়াওয়ের অপারেটি সিস্টেমটির আরেকটি ফিচার হচ্ছে এটি একাধিক প্রোগ্রামিং ভাষা বুঝতে সক্ষম। এর মধ্যে সি/সি++, জাভা, জাভাস্ক্রিপ্ট, ও কটলিন রয়েছে।