চলতি বছর আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) আঞ্চলিক ব্র্যান্ড পার্টনার হওয়ার জন্য ৪.১০ লাখ ডলার পেমেন্ট করার অনুমতি পায়নি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বিকাশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোঃ সারোয়ার হোসেন পেমেন্টের অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এএফএ’র সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ডলার পাঠানোর জন্য বিকাশ অনুমতি চেয়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপট ও অনুৎপাদনশীল খাত বিবেচনায় মার্চে তাদের আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ডলারের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে ব্যাংক খাতের মাধ্যমে এই পরিমাণ ডলার আর্জেন্টিনায় পাঠানোর অনুমতি দেওয়া যাবে না।
বিকাশের প্রচারিত বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, কোম্পানিটি এএফএ-এর রিজিওনাল ব্র্যান্ড পার্টনার হিসাবে যুক্ত হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে এএফএ’র সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের ওয়েবসাইটে এএফএ-এর লোগোও ব্যবহার করছে।
অবশ্য এএফএ এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে বিকাশকে রিজিওনাল ব্র্যান্ড পার্টনার-এর বদলে রিজিওনাল স্পন্সরস হিসাবে দেখানো হয়েছে।
ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বিকাশ ছাড়াও দুগ্ধজাত পণ্য প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আমূল এবং টাটা গ্রুপ অব কোম্পানিজের টাটা গ্লুকো প্লাস সহ আরো ১৬টি প্রতিষ্ঠান এএফএ এর রিজিওনাল স্পন্সরস হিসেবে আছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ‘এখন আমাদের ডলারের সংকট চলছে। ব্যাংকগুলো অনেক পণ্য আমদানি করার জন্য ঠিকমতো লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলতে পারছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে বিলাসদ্রব্য আমদানিতে ১০০% মার্জিন রাখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। মূলত আমদানি নিরুৎসাহিত করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় একটা ফুটবল টিমকে ব্র্যান্ড পার্টনার করতে ডলার খরচ করা উচিত বলে মনে করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’
সাধারণত এই ধরণের স্পন্সরশিপের ক্ষেত্রে বাইরে টাকা পাঠালে একটি নির্দিষ্ট হারে ভ্যাট ও ট্যাক্স দিতে হয় উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে টাকা পাঠালে ভ্যাট ও ট্যাক্সের টাকা বাংলাদেশ পাবে। অনুমতি ছাড়া এ ধরণের পেমেন্ট করার কোনো সুযোগ নেই। এখন অন্য কোনো মাধ্যমে পেমেন্ট হয়ে থাকলে সেটা আইনবহির্ভূত।’
গত ৮ মে বিকাশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এএফএ এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ তাদের ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ ঘোষণা করে।
বিকাশ জানিয়েছে, আর্জেন্টিনা দল বাংলাদেশি ভক্তদের কাছ থেকে যে অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালোবাসা পেয়েছে, সেই আবেগ আর প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়েই বিশ্বকাপজয়ী দলের সাথে বিকাশের এই ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ।
বিজ্ঞপ্তিতে বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর জানান, বিশ্বের শীর্ষ ফুটবল দল আর্জেন্টিনা এবং লিওনেল মেসির মতো খেলোয়াড়রা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রিয় ব্র্যান্ড বিকাশ-এর সাথে সহযোগী হতে আগ্রহী হয়েছে।