ওয়ালটন ও ইন্টেলের বিজনেস পার্টনারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো টেক গালা নাইট। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেল এবং বাংলাদেশের টেক জায়ান্ট ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে অনুষ্ঠিত এই গালা নাইটে উভয় প্রতিষ্ঠান বাজারে থাকা তাদের প্রযুক্তিপণ্য এবং আপকামিং নানান উন্নত প্রযুক্তি বিজনেস পার্টনারদের কাছে তুলে ধরে। এতে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধতন কর্মকর্তাগণ যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) ইবনে ফজল শায়খুজ্জামান, ডিএমডি নজরুল ইসলাম সরকার ও ইভা রিজওয়ানা নিলু, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর লিয়াকত আলী, ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ শাহজাদা সেলিম, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জিনাত হাকিম, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ প্রমুখ।
অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে ইন্টেলের আপকামিং পণ্য বিষয়ে পার্টনারদের ব্রিফ করেন প্রতিষ্ঠানটির ফিল্ড অ্যাপ্লিকেশন ইঞ্জিনিয়ার বুন হাউ পো এবং বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়া মনজুর।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর স্বনামধন্য অভিনেতা আজিজুল হাকিম।
স্বাগত বক্তব্যে ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের এএমডি লিয়াকত আলী বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ছিলো দেশকে শিল্পসমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তোলা এবং ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ওয়ালটন এই লক্ষ্যে কাজ করছে। দেশ এখন ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। ইলেকট্রনিক্স পণ্যের পাশাপাশি প্রযুক্তিপণ্য রপ্তানি খাতেও আমাদের কার্যক্রম ও পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জিয়া মনজুর তার বক্তব্যে বলেন, ২০১৬ সাল থেকে ইন্টেলের কো-পার্টনার হিসেবে ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি গেমিং, সিমুলেশনসহ শিক্ষার্থীদের উপযোগী নানান ধরনের ল্যাপটপ উৎপাদন ও বিক্রি করছে। বাংলাদেশের প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনখাতে ওয়ালটন ব্যাপকভাবে কাজ করছে, যার সুফল আমরা পাচ্ছি। ওয়ালটন মানুষের হাতের নাগালে প্রযুক্তিপণ্য পৌঁছে দিচ্ছে। তথ্য-প্রযুক্তিখাতে ওয়ালটনের দারুণ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে প্রথম বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইন্টেলের মার্কেট এক্সিলারেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ পেয়েছে ওয়ালটন ডিজি-টেক। এটি বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়।
দেশের প্রযুক্তিখাতে ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কার্যক্রম নিয়ে প্রাণবন্ত ও তথ্যবহুল একটি প্রেজেন্টেশন দেন তৌহিদুর রহমান রাদ। তিনি জানান ২৪টি ব্র্যান্ডের অধীনে বর্তমানে ৩৭ ধরনের প্রোডাক্ট উৎপাদন করছে ওয়ালটন ডিজি-টেক। সারাদেশে ওয়ালটনের ৬৩৬টি রিটেইল শপে ওয়ালটন ডিজি-টেকের সকল পণ্য এভেইলেভল রয়েছে। সেইসাথে দেশব্যাপী প্রায় ১০০টি সার্ভিস সেন্টার থেকে গ্রাহক দ্রুততম সময়ে বিক্রয়োত্তর সেবা পাচ্ছেন।
ওয়ালটন ডিজি-টেক সময়ের সাথে সাথে পণ্যের ডেভেলপমেন্ট করে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০২৪ সাল থেকে আল্ট্রা কোর প্রসেসর যুক্ত ওয়ালটন ডিজিটাল ডিভাইস বাজারে আসছে। একইসঙ্গে ১৩ ও ১৪ জেনারেশনের পণ্য উন্মোচন করবে ওয়ালটন। থাকবে ডিডিআর ফাইভ র্যামযুক্ত প্রযুক্তিপণ্য।
তিনি বলেন, ইন্টেল আর্ক নামে নতুন গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। বর্তমানে মার্কেটে আকর্ষণীয় পণ্য ওয়ালটনের অল-ইন-ওয়ান পিসি। বাংলাদেশের ওয়ালটনের রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম পিসিবি ও পিসিবিএ উৎপাদন প্ল্যান্ট। ওয়ালটনের মাদারবোর্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে যা পুরোপুরি অটোমেটেড বা রোবটিক। নিজস্ব ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টে র্যাম ও এসএসডির মতো হাই-টেক পণ্য তৈরি হচ্ছে। হার্ডওয়ারের পাশাপাশি আমরা সফটওয়্যারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের ডিজিটাল ডিভাইস পণ্যে একটি ইকোসিস্টেম রয়েছে।
এছাড়াও তিনি ওয়ালটন ডিজি-টেকের নিজস্ব সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ডেভেলপকৃত পাই পাই বিজনেস সফটওয়্যার, এইচআরএম, বেঞ্চ এডুকেশন, এমডিএম ইত্যাদি সম্পর্কে নানান তথ্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ওয়ালটন ডিজি-টেক উৎপাদিত পণ্যসমূহ নিয়ে সাজানো ডিসপ্লে সেন্টারে ছিলো ইউজার এক্সপেরিয়েন্স নেয়ার সুযোগ। সবশেষে সংগীতশিল্পী লিজা তার জাদুকরী কণ্ঠে সবাইকে মোহিত করেন।