২০১৬ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছর ব্যাপী পরিবর্তনশীল মূলধন ব্যবস্থাপনা প্রোগ্রামের ১০ বছরের পথনকশা প্রণয়নের কাজ করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বিনিয়োগকারী ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক তহবিল সংগ্রহের প্রকল্পে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও দ্রুত বর্ধনশীল অবকাঠামোগত উন্নয়নে শুধু দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদেরই সুযোগ ছিল, মাত্র ৪ বছর সময়ের মধ্যে আদানি ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছে। এই কোম্পানির উপর বিনিয়োগকারীদের এই আস্থার ফলে আদানির ব্যবসায়িক দক্ষতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা আরো স্পষ্ট হয়। একইসাথে আর্থিক তহবিল সংগ্রহের প্রতি ধাপে পারদর্শিতাও আদানি গ্রুপের জন্য একটি শক্তিশালী দিক হিসেবে ধরা দিয়েছে।
জ্বালানি ও পরিষেবা থেকে শুরু করে যাতায়াত ও রসদ পরিবহন পর্যন্ত সামগ্রিক অবকাঠামোগত পরিসরে এর পোর্টফোলিও কোম্পানিগুলোর বিস্তৃতির ক্ষেত্রে ‘আদানি পোর্টফোলিও’ একটি ‘ওয়ান স্টপ সল্যুশন’ হিসেবে পরিচিত। যেসব তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এতে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহী হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে– আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড (এপিএসইজেড), আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড (এজিইএল), আদানি ট্রান্সমিশন লিমিটেড (এটিএল), আদানি টোটাল গ্যাস লিমিটেড (এটিজিএল) এবং আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড (এইএল)।
গ্রুপটির মূলধন পরিচালনার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের ভাবনার সাথে তাল মেলাতে আদানি এর সহ-বিনিয়োগকারী অস্ট্রেলিয়া সুপার, গোল্ডম্যান স্যাকস, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, ডেলাওয়ার পাবলিক এমপ্লয়িস রিটায়ারমেন্ট সিস্টেম, মাস্টার ট্রাস্ট ব্যাংক অব জাপান, মিসৌরি এডুকেশন পেনশন ট্রাস্ট, আবুধাবি ইনভেস্টমেন্ট অথোরিটি, ইউনিভার্সাল ইনভেস্টমেন্ট লুক্সেমবার্গ, নিউ ইয়র্ক স্টেট কমন রিটায়ারমেন্ট ফান্ড অ্যান্ড এমপ্লয়িস রিটায়ারমেন্ট সিস্টেম অব টেক্সাস ছাড়াও ‘কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথোরিটি (কিউআইএ), টোটালএনার্জিস (টিটিই), ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং কোম্পানি (আইএইচসি) এবং জিকিউজি পার্টনারস (জিকিউজি) এর মতো বড় মাপের বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে পেরেছে।
সম্প্রতি আদানি পরিবার এইএল, এজিইএল এবং এটিএল– এই তিনটি পোর্টফোলিও কোম্পানির ‘স্টেক সেল’ এর মাধ্যমে ১.৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১১,৩৩০ কোটি রূপি) তহবিল সংগ্রহ করেছে। এতে করে পরবর্তী ১২-১৮ মাসের জন্য ঋণ ও ইক্যুইটি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া গতিশীল হবে। তিনটি পোর্টফোলিও কোম্পানিই প্রাথমিক ইস্যুকরণের জন্য বোর্ড থেকে অনুমোদন পেয়েছে।
২০২৩ সালে ১.৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (১৫,৪৪৬ কোটি রূপি) সমমানের আদানি গ্রুপের একই রকম আরেকটি স্টেক-সেল হয়েছে। এতে দরবৃদ্ধির আবহে একধরনের শিথিলতা সৃষ্টি হয়, যাতে করে ঋণ সংক্রান্ত পুঁজি পরিশোধের সময়সীমায় বাধ্যবাধকতা কম থাকে।
এইএল বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘বিজনেস ইনকিউবেটর’গুলোর একটি, যা অবকাঠামোগত ব্যবসায় নির্মাণে কাজ করে। এটির মাধ্যমে ভারতের শিল্প ও পরিবহন খাতে ‘ডিকার্বনাইজেশন’ সম্ভব হবে এবং জ্বালানি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারত আরো স্বনির্ভর হবে। দ্বিতীয় পোর্টফোলিও কোম্পানি এজিএল সর্ববৃহৎ ও বর্ধনশীল নবায়নযোগ্য। এতে আছে ৮.১ গিগাওয়াটের সক্রিয় পোর্টফোলিও। ২০৩০ সালের মধ্যে এ কোম্পানি থেকে সবচেয়ে সাশ্রয়ী উপায়ে ৪৫ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। অন্যদিকে জ্বালানি ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন এবং আধুনিক বা স্মার্ট মিটার পদ্ধতির ক্ষেত্রে এটিএল বর্তমানে ভারতের সর্ববৃহৎ বেসরকারি জ্বালানি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান।