মেমোরি চিপ উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত কোম্পানি হচ্ছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। তবে বর্তমানে মুনাফা অর্জনের দিক থেকে প্রতিযোগী তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং করপোরেশনের (টিএসএমসি) তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে স্যামসাং। বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্থর গতির কারণে টানা চার প্রান্তিক ধরে সেমিকন্ডাক্টর ব্যবসায় প্রবৃদ্ধির মুখ দেখতে পারছে না দক্ষিণ কোরিয়ার এ প্রযুক্তি জায়ান্ট।
শিল্প খাতসংশ্লিষ্টদের তথ্যানুযায়ী, দ্বিতীয় প্রান্তিকে টিএসএমসির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বাজার বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের তুলনায় যা সামান্য বেশি। কিন্তু স্মার্টফোনসহ অন্যান্য ডিভাইসের চাহিদা কমে যাওয়ায় চিপ বিক্রিতে মন্দাভাব কাটাতে পারেনি কোম্পানিটি।
অন্যদিকে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস সম্প্রতি দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয় নির্দেশিকার বিষয়ে জানিয়েছে। কিন্তু আলাদাভাবে কোনো ব্যবসার তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে বাজার তদারক সংস্থা ও সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্টটির চিপ বিজনেস ডিভিশন, ডিভাইস সলিউশন ১ হাজার ১০ থেকে ১ হাজার ৮০ কোটি ডলার আয় করবে, যা আগের বছরের ২ হাজার ২১০ কোটি ডলারের প্রায় অর্ধেক।
কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্টটি এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ৪৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার পরিচালন মুনাফা অর্জনের পূর্বাভাস দিয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ দশমিক ৩ শতাংশ কম। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, স্যামসাংয়ের ডিএস ডিভিশনের বিক্রি যদি পূর্বাভাসের সঙ্গে মিলে যায় তাহলে এটি টানা চতুর্থ প্রান্তিকের মতো তাইওয়ানের শীর্ষ ফাউন্ড্রি লিডারের কাছে শীর্ষস্থান হারাবে।
মুনাফা অর্জনের দিক থেকে ২০২১ সালে চিপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টেলকে ছাড়িয়ে যায় স্যামসাং। মেমোরি চিপের বিক্রি বাড়ায় তিন বছর পর প্রথমবারের মতো শীর্ষে উঠে আসে কোম্পানিটি। কিন্তু এ পণ্যের বাজারে ধস নামায় গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিক থেকে আবারো পিছিয়ে পড়ে কোম্পানিটি। ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে টিএসএমসি ১ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার মূ্ল্যের পণ্য বিক্রি করেছে। যেখানে স্যামসাংয়ের ডিএস ডিভিশনের বিক্রির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৮০ কোটি ডলার। চতুর্থ প্রান্তিকে তাইওয়ানের ফার্ম ও কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্টটি যথাক্রমে ১ হাজার ৯৯০ ও ১ হাজার ৫৬০ কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দুটি কোম্পানির মধ্যে বিক্রির এ দূরত্ব আরো বেড়ে যায়।
তৃতীয় প্রান্তিকের জন্য ১ হাজার ৬৭০ থেকে ১ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার মুনাফা অর্জনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে টিএসএমসি। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, চিপ উৎপাদন কমানোর কারণে স্যামসাং যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে বা লোকসানের মুখে পড়েছে তৃতীয় প্রান্তিক থেকে হয়তো তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারবে।