মেমোরি চিপের বৈশ্বিক বাজারে যে দুরবস্থা ছিল তা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তবে এর পরও উৎপাদন কমানোর কথা জানিয়েছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। কেননা বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) ব্যবহৃত হাই এন্ড চিপকে ঘিরেই মূল চাহিদা।
চিপ উৎপাদনের মাধ্যমে মূলত বড় ধরনের ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্টটি। কিন্তু এ খাতে মন্দা থাকায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটি ৮ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ওন বা ৭০০ কোটি ডলার পরিচালন ক্ষতির শিকার হয়েছে। চলতি প্রান্তিকেও ব্যবসা খাতটি নেতিবাচক অবস্থায় থাকবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। যদিও দ্বিতীয় প্রান্তিকে ক্ষতির পরিমাণ অর্ধেক কমে ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ওনে নেমে এসেছে। রেফিনিটিভের জরিপে অংশ নেয়া ২২ বিশ্লেষক এ কথা জানান।
কভিড-১৯ মহামারীর সময় চাহিদা বাড়লেও অর্থনৈতিক স্থবিরতা ও উচ্চ সুদ হার গ্রাহকের চাহিদা কমিয়ে দিয়েছে। এক বিবৃতিতে বিশ্বের অন্যতম মেমোরি চিপ উৎপাদনকারী স্যামসাং জানায়, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে উৎপাদনের হার আরো কমানো হবে। সেই সঙ্গে গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদার যে ঘাটতি ছিল তাও পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে শুরু করবে। স্যামসাংয়ের মেমোরি বিজনেসের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট জায়জুন কিম আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় জানান, কোম্পানিটি আরো উৎপাদন কমাবে। পাশাপাশি ডিজিটাল তথ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত ন্যান্ড ফ্ল্যাশসহ অন্যান্য পণ্যের জন্য আলাদা উদ্যোগ গ্রহণ করবে। তবে স্যামসাং কী পরিমাণ উৎপাদন কমাবে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
অন্যদিকে এসকে হাইনিক্স জানায়, কোম্পানিটি ন্যান্ড চিপের উৎপাদন আরো ৫-১০ শতাংশ কমানোর কথা ভাবছে। বিএনকে ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক লি মিন-হি বলেন, ‘এসকে হাইনিক্সের দুর্বলতা হচ্ছে ন্যান্ড। প্রতি প্রান্তিকে কোম্পানিটি ২ ট্রিলিয়ন ওন লোকসান করছে। এ চিপের সরবরাহ যদি আরো কমানো হয় তাহলে দাম স্থিতিশীল হতে পারে। আর এটি হাইনিক্সের জন্য সুখবর হবে।’
২০২২ সালের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে স্যামসাং চিপ খাত থেকে ৯ দশমিক ৯৮ ট্রিলিয়ন ওন মুনাফা করেছে। সেখানে চলতি বছরের একই সময়ে ৪ দশমিক ৩৬ ট্রিলিয়ন ওন লোকসানে পড়েছে। তবে এসকে হাইনিক্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছে স্যামসাং। কেননা বর্তমানে এআইনির্ভর চিপের চাহিদা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
লি বলেন, ‘উচ্চ মানের চিপ তৈরিতে স্যামসাং এগিয়ে থাকলেও, বাজার যে দ্রুত বৃদ্ধি পাবে সে বিষয়ে ধারণা ছিল না। সেই সঙ্গে উৎপাদন ও বাজারজাতের দিক থেকে স্যামসাংকে ছাড়িয়ে গেছে হাইনিক্স।’