ঢাকার কারওয়ান বাজারে ‘ভিশন-২০৪১ স্মার্ট টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
৯ আগস্ট বুধবার সকালে ভিশন-২০২১ সফটওয়্যার টেকনোলোজি পার্কের পাশে এই ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
০.৪৭ একর জায়গায় সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও ইনোভেশন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে অত্যাধুনিক এই পার্কের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আইটি সেক্টরে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে স্পেসের ব্যাপক চাহিদা পূরণ এবং ব্র্যান্ডিংয়ের উপযুক্ত ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার জন্য কাওরান বাজারে আরো একটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের কাজ আজ শুরু হলো। প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার বর্গফুট স্পেস বিশিষ্ট ৪টি বেজমেন্টসহ ০৯ তলা এই গ্রিন বিল্ডিং তৈরিতে প্রায় ১৬০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
প্রতিমন্ত্রী পলক আরো বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় আইসিটি বিভাগে ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন’ এবং ‘এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি’ নামে দুইটি পৃথক প্রকল্প চলমান রয়েছে। দেশে ইনোভেশন ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের গতি বৃদ্ধি করতে ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরি করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। ফলে তরুণ প্রজন্ম চাকরি খোঁজার পরিবর্তে চাকরি সৃষ্টির প্রতি অধিক মনযোগী হবে। অথচ ১৩ বছর আগে দেশের স্বল্প শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম কর্মসংস্থানের জন্য গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর শিল্পের উপর নির্ভরশীল ছিল। বর্তমানে তারা আইটি শিল্পে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে। এছাড়া স্টার্টআপ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশের হার বাড়ানো এবং জেন্ডার ইনক্লুসিভ ডিজিটাল এন্টারপ্রেনারশিপ তৈরি করা এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য। খুব দ্রুতই এই স্মার্ট টাওয়ারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, এই স্মার্ট টাওয়ারে যেসব কার্যক্রম চলবে তা বাংলাদেশে ডিজিটাল অর্থনীতি প্রসারে সহায়ক পরিবেশ তৈরি এবং দেশীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিল্পের প্রসার ঘটাতে ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফরুল্লাহ বলেন, দেশের ইনোভেশন কার্যক্রমকে গতিশীল করে একটি ইনোভেশন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের অর্থায়নে ও বিশ্বব্যাংকের ঋণে মোট ৩৫৩.০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের আওতায় ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে ইনোভেশন ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি। আজ এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে একটি টেকসই ইনোভেশন ইকোসিস্টেম তৈরির পথ সুগম হলো।
ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’ প্রকল্পের পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান জানান, এই প্রকল্পের আওতায় কারওয়ান বাজারে এই স্মার্ট টাওয়ার স্থাপনের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব এবং কমন ফ্যাসিলিটি হিসেবে চারটি বিশেষায়িত ল্যাব তৈরি করা হবে। দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এছাড়াও স্টার্ট-আপদের জন্য স্কেল-আপ প্রোগ্রাম ও মেন্টরিং করা হবে।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও ইনোভেশন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের উপ পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম, বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।