যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে বর্তমানে চীন ও সেখানকার প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো চিপ উৎপাদন করতে পারছে না। প্রযুক্তি ও উৎপাদন উপাদান রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা অনেক কোম্পানির কার্যক্রমকে প্রভাবিতও করছে। যাদের মধ্যে হুয়াওয়ে অন্যতম। বিশ্ববাজার থেকে কোম্পানিটি স্মার্টফোন ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। তবে এত কিছুর পরও স্মার্টফোনের জন্য পুনরায় কিরিন চিপসেট বাজারজাতের কথা ভাবছে।
কোম্পানিটি বর্তমানে সেলফোনের জন্য কিরিন চিপ সরবরাহের পথ তৈরিতে কাজ করছে বলে ধারণা বাজার বিশ্লেষকদের। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে হুয়াওয়ের হাইসিলিকন ডিভিশন কিরিন চিপসেট তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি) চিপ তৈরিতে কাজ করেছে। এদিক থেকে অ্যাপলের পর ক্রেতার তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হুয়াওয়ে।
২০২০ সালে নিষেধাজ্ঞার কারণে চিপ উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহারে বাধার মুখে পড়ে হুয়াওয়ে। তবে কোম্পানিটি মডিফাই করা স্ন্যাপড্রাগন চিপ সংগ্রহের অনুমতি পায়। তবে চিপগুলোয় ফাইভজি নেটওয়ার্ক সংযোগ ছিল না। পাশাপাশি চীনের এ প্রযুক্তি কোম্পানি কিরিন চিপসেট পুনরায় বাজারে আনতে উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে।
ফোন অ্যারেনা প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, হুয়াওয়ের সবশেষ কিরিন চিপসেট ৯০০০ ৫ ন্যানোমিটার প্রসেস নোডে তৈরি হয়েছিল এবং এতে ফাইভজি মডেম ছিল। চিপসেটে দুটি করটেক্স এক্স৩ প্রাইম সিপিইউ কোর, দুটি করটেক্স এ৭১৫ পারফরম্যান্স সিপিইউ কোর ও চারটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করটেক্স এ৫১০ সিপিইউ ছিল।
কারো মতে, যে বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে তা হয়তো অন্য চিপ মডেলের হতে পারে। উইবোতে দেয়া আলাদা আরেক পোস্টে কিরিন ৭২০, ৮৩০ ও ৯১০০ সিরিজের তিনটি কিরিন চিপসেট হয়তো তৈরি করা হবে। চলতি বছর শেষে প্রথম দুটি সিরিজ আসতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। অন্যদিকে পি৭০ ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসের মাধ্যমে আগামী বছরের শুরুতে কিরিন ৯১০০ উন্মোচন করা হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।
প্রযুক্তি বিশারদদের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের মনেও একই প্রশ্ন। সেটি হলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে হুয়াওয়ে কীভাবে কিরিন চিপ তৈরি করবে। এক প্রতিবেদনে নোটবুক চেক জানায়, চীনের শীর্ষ ফাউন্ড্রি এসএমআইসি চিপ উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করবে এবং এজন্য অ্যাডভান্সড এনপ্লাস২ (৭ ন্যানোমিটার) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
অন্যভাবে হুয়াওয়ে হয়তো ১৪ ন্যানোমিটারের দুটি চিপকে একত্র করে ৭ ন্যানোমিটারের কার্যক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা চালাতে পারে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্মার্টফোন থেকে ভালো ফিডব্যাক পাওয়ার জন্য তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে এবং বিদ্যুৎ ব্যয় কমানোর দিকে লক্ষ্য রাখবে বলেও জানা গেছে।
সিএনবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফাইভজি ও অন্যান্য প্রযুক্তি রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্রের যে নিষেধাজ্ঞা হুয়াওয়ে দীর্ঘদিন থেকে এর বিরোধিতা করে আসছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ হুয়াওয়ের কাছে পণ্য ও প্রযুক্তি বিক্রিতে অনুমতি গ্রহণের নিয়ম করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, হুয়াওয়েকে ফোরজি স্মার্টফোন সরবরাহের জন্য কোয়ালকম ২০২০ সালে অনুমতি পেয়েছিল।