মোবাইল চুরির আগে ও পরে
হুট করে চুরি হয়ে গেল মোবাইলটা। কিভাবে সেটা উদ্ধার করবেন কিংবা কিভাবেই বা সেটে থাকা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদে রাখবেন? জানাচ্ছেন তামজীদ রহমান লিও
চুরি যাওয়ার আগেই যদি আমরা কিছু পূর্বপ্রস্তুতি রাখি, তাহলে হয়তো চুরি ঠেকানো সম্ভব না হলেও চুরির পর ফোনটি উদ্ধার করা সহজতর হবে। শুধু তা-ই নয়, ডিভাইসে থাকা ব্যক্তিগত ডাটাগুলোও থাকবে নিরাপদে। এ ক্ষেত্রে মোবাইলের নিরাপত্তা জোরদার করতে বেশ কিছু অ্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
হোয়্যারস মাই ড্রয়েড
অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের মোবাইলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল চুরি প্রতিরোধী অ্যাপ হচ্ছে ‘হোয়্যারস মাই ড্রয়েড’। অসংখ্য সুবিধা সংবলিত এই অ্যাপের একটি বিনা মূল্যের সংস্করণ এবং দুটি পেইড সংস্করণ রয়েছে। অ্যাপটির বিনা মূল্যের সংস্করণ আপনার ফোনে ইনস্টল করা থাকলে ঘরে বসেই ফোনটির অবস্থান জানতে পারবেন, রিং দিতে পারবেন, এমনকি পাসওয়ার্ড সেট করতে পারবেন। কেউ সিম পরিবর্তন করলে অ্যালার্ট ম্যাসেজও পাবেন। অ্যাপটি কিনে নিলে প্রো সংস্করণে পাওয়া যাবে আরো কিছু এডভান্সড ফিচার। এই ফিচার দিয়ে দূর থেকেই ফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি তোলা, ডিভাইস লক করা, ডাটা মুছে ফেলা ও অ্যাপ আইকন হাইড করে ফেলার মতো চমৎকার সব ফিচার পাওয়া যাবে।
ফাইন্ড মাই ডিভাইস
এই অ্যাপটি হারানো ফোন খোঁজার জন্য গুগলের ‘ইন হাউস’ সমাধান। অ্যাপটি আপনার গুগল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সমন্বিত থাকে, যার মাধ্যমে আপনার গুগলের অন্য সার্ভিসের ডাটাগুলো নিরাপদ রাখা যায়। সম্পূর্ণ বিনা পয়সার এই অ্যাপে গুগল ম্যাপে আপনার ফোনের অবস্থান জানা, রিমোটলি লক করা, জোরে অ্যালার্ম বাজানো এবং ডাটা মুছে ফেলার মতো ফিচার আছে। যেহেতু এটি গুগল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সমন্বিত থাকে, তাই এক অ্যাকাউন্ট দিয়ে কয়েকটি ডিভাইসে এটি ব্যবহার করা যায়। ফোন হারিয়ে গেলে ঘরে বসেই গুগলে লগইন করে ‘ফাইন্ড মাই ফোন’ লিখলেই প্রয়োজনীয় অপশনগুলো আপনার সামনে চলে আসবে।
সারবেরাস
সর্বাধিক ফিচার সংবলিত অ্যাপগুলোর কথা বললে এটির নাম চলে আসে সবার আগে। এই অ্যাপের মাধ্যমে ডিভাইসের ইনকামিং এবং আউটগোয়িং কলের তালিকা দেখা যায়। পাশাপাশি ঘরে বসেই ফোনের মাইক্রোফোন গোপনে চালু করা, অ্যাপ লুকানোর মতো ফিচারও এটিতে রয়েছে। এক সপ্তাহের জন্য এই অ্যাপ বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায়। এরপর এককালীন ২.৯৯ ডলার ফি দিয়ে আজীবন ব্যবহার করা যাবে। সবচেয়ে কম খরচে সর্বাধিক কার্যকর এই অ্যাপটি চুরি যাওয়া ফোন উদ্ধারে আসলেই চমৎকার ভূমিকা রাখে।
গুগল ম্যাপ
অনেকেই জানেন না, গুগল ম্যাপের সাহায্যেও চুরি যাওয়া ফোনের খোঁজ মিলতে পারে। ইদানীংকালের সব ফোনেই গুগল ম্যাপ বাই ডিফল্ট ইনস্টল থাকে। যদি চুরি যাওয়া ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ থাকে, তাহলে https://www.google.com/maps/timeline ঠিকানায় গিয়ে সরাসরি দেখা যাবে সেই ফোনটির বর্তমান অবস্থান। শুধু তা-ই নয়, সিম পরিবর্তন করে যদি ইন্টারনেট সংযোগও দেওয়া হয়, একই লিংকে গিয়ে তত্ক্ষণাৎ ফোনের অবস্থান জানা যাবে।
সতর্কতা
ওই অ্যাপগুলোর ব্যবহার ছাড়াও আপনার প্রিয় মোবাইলটিতে অন স্ক্রিন লক ফাংশনটি অবশ্যই ব্যবহার করবেন। ব্যক্তিগত ফাইলগুলো যেখানে থাকে—যেমন ছবি বা ডকুমেন্ট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাপগুলো এবং ই-মেইল অ্যাপ অবশ্যই লক রাখবেন।
সব ধরনের ফাইলের স্বয়ংক্রিয় ক্লাউড ব্যাকআপ সিস্টেম রাখবেন যেমন—গুগল ফটোজ, স্কাইড্রাইভ, ড্রপবক্স ব্যবহার করবেন এবং অটো ব্যাকআপ অপশনটি চালু রাখবেন। এতে ফোন চুরি হলে ওপরের অ্যাপগুলোর সাহায্যে ফোনের সব ডাটা মুছে ফেললেও আপনার কোনো ক্ষতি হবে না।