চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিশ্বজুড়ে কম্পিউটার বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৪৩ লাখ ইউনিট, যা ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় ৯ শতাংশ কম। গার্টনার ইনকরপোরেটেডের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাপী কম্পিউটারের বাজার টানা অষ্টম প্রান্তিকের মতো নিম্নমুখী। তবে গার্টনারের প্রতিবেদনে চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মিকাকো কিতাগাওয়া বলেন, ‘কিছু প্রমাণ রয়েছে, যার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে ব্যক্তিগত কম্পিউটারের (পিসি) বাজার এখনো নিম্নমুখী। শিক্ষা খাতে মৌসুমি চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তৃতীয় প্রান্তিকে বিক্রি কিছুটা বাড়লেও এন্টারপ্রাইজ পিসির চাহিদা সার্বিকভাবে দুর্বল। বিক্রেতারা যন্ত্রাংশের মজুদও ধীরে ধীরে কমিয়ে আনছে। তবে আশা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ বাজার চাহিদা আবারো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। আগামী ছুটির মৌসুমে বাজার কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফিরতে পারে।’
বিশ্বব্যাপী পিসি বাজারের শীর্ষ বিক্রেতাদের অবস্থান তৃতীয় প্রান্তিকেও অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনোভো ২৫ দশমিক ১ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে শীর্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আংশিক কমেছে। গত বছরের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে গত বছরের পর এবারো প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে এইচপি। ডেলের বিক্রি টানা ষষ্ঠ প্রান্তিকে নিম্নমুখী ছিল। এর মূল কারণ এন্টারপ্রাইজ পিসির চাহিদা কমে যাওয়া।
অ্যাপলের বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তীব্রভাবে কমেছে। ২০২২ সাল থেকে চীনে মহামারী-পরবর্তী লকডাউন নীতি শিথিল করা শুরু হয়। ওই বছরের প্রথম দিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে বিক্রি বাড়তে শুরু করে। তবে সে সময়ের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে বিক্রি অনেকাংশে কমে এসেছে। ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বাজারে অ্যাপলের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে।
মাইক্রোসফটের সর্বশেষ ভার্সন উইন্ডোজ ১১ আপগ্রেডের মাধ্যমে ব্যবসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত পিসির বাজার পরবর্তী বাণিজ্যিক ধাপে অগ্রসর হবে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে ব্যক্তিগত কম্পিউটারের চাহিদাও পুনরুদ্ধার শুরু হবে।
গার্টনারের নতুন পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক পিসি বাজারে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও তৃতীয় প্রান্তিকে পিসি বিক্রি ৯ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে।
ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের পিসি বাজার গত বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। ক্রমাগত রাজনৈতিক অস্থিরতা, মূল্যস্ফীতির চাপ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদহার বাড়ার কারণে বাজারে চাহিদা কমছে।
ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে বাণিজ্যিক পিসির চাহিদা কমেছে। কারণ কোম্পানিগুলো খরচ ব্যবস্থাপনার কৌশল হিসেবে এ খাতে বাজেট কমিয়েছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির চাপ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদহার বৃদ্ধির কারণে ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের গ্রাহকদের আয় কমেছে। এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে এসব অঞ্চলের পিসির বাজারে।