ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন ডিজিটার বিপ্লব বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সকল দেশের সকল মানুষের জন্য এক নয় এবং সকল দেশের সকল মানুষের জন্য প্রযুক্তির প্রয়োগেরও রয়েছে ভিন্নতা। ৫জি প্রযুক্তির ফলে ড্রাইভারবিহীন গাড়ী পৃথিবীর যে সকল উন্নত দেশের মানব সম্পদের ঘাটতি রয়েছে তাদের জন্য আশির্বাদ হতে পারে কিন্তু বিদেশে আমাদের মতো জনশক্তি রপ্তানিকারকদের তা মোটেও সুখকর হতে পারে না। যে প্রযুক্তি আমাদের জীবন যাপনে কাজে আসবে, যে প্রযুক্তি মানুষে মানুষে বৈষম্য কমাবে এবং যে প্রযুক্তি গ্রামের মানুষটিও ঘরে বসে জীবনমান উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারবে এবং যে প্রযুক্তি প্রত্যন্ত গ্রামে বসেও উন্নত চিকিৎসায় সহায়তা করতে পারবে আমাদের দরকার এইরূপ প্রযুক্তি।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর কম্পিউটারকৌশল বিভাগের উদ্যোগে ‘রোল অব বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ইন দি ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিভিউলেশন” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে বড় সংকটের নাম বৈষম্য। বৈষম্য দূর করতে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। এই প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজন মেধা। গ্রামে বসেও একজন বিলগ্রেড হতে পারে। প্রয়োজন ডিজিটাল অবকাঠামো। দশ বছরে আমরা সে জায়গায় পৌঁছেছি। গত দশবছরে মাথা পিছু আয় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রবৃদ্ধি অর্জন ৮ দশমিক ১৩ভাগে উন্নীত হয়েছে। মূদ্রাস্ফীতি ৫ থেকে সাড়ে পাঁচে উঠা নামা করছে। অথচ দশ বছর আগেও দেশের মূদ্রাস্ফতি ছিলো দুই অংকের কোঠায়।
সরকারের চারশতাধিক ডিজিটাল সেবা জনগণের দারপ্রান্তে পৌছে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ পৃথিবীর প্রতিটি দেশের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হবে। তিনি বাংলাদেশের তরুণ উদ্ভাবকদের প্রযুক্তি বিশে^ও ৮০টির বেশী দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের মেধাবী তরুণরা আর্থিকখাতের জন্য ২০০ কোটি টাকার আমদানিকৃত সফটওয়্যার মাত্র মাত্র ৫ কোটি টাকায় তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে। প্রযুক্তিনির্ভর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তৃনমূল জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় আধুনিক চিকিৎসা সেবা পৌছে দিতে প্রযুক্তিগত সহায়তায় তরুণ
প্রযুক্তি উদ্ভাবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
আইইবি’র কম্পিউটারকৌশল বিভাগের সম্পাদক প্রকৌশলী মো. রনক আহসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান, এমপি,আইইবির ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী নুরুজ্জামান, আইইবি’র কম্পিউটারকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম এবং আইইবি’র কম্পিউটারকৌশল বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. তমিজ উদ্দিন আহমেদ বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইমামুল হাসান।