কুমিল্লার লালমাইয়ে ডিজিটাল কারচুপিতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ এর মাধ্যমে বিতরণকৃত বয়স্ক ও বিধবা এবং প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা চলে যাচ্ছে প্রতারকের হাতে।মানুষের ব্যক্তিগত ‘নগদ’ একাউন্টে আসা সরকারি ভাতার লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। বৃদ্ধ ভাতাভোগীরা দিনের পর দিন সমাজসেবা অফিসে গিয়ে ভীড় জমাচ্ছেন। কয়েকদফা ফোন নাম্বার পরিবর্তন করেও রক্ষা পাচ্ছেন না তারা। সমাজসেবা কার্যালয়ে এসে জানালেও কোন সুরাহা মিলছে না।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন লালমাই উপজেলার সুবিধাভোগী বয়ষ্ক ও বিধবা,প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তদের তিন মাসের ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ এর মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। বয়স্ক ভাতা আঠারশত টাকা এবং বিধবা ভাতা ষোলশত পঞ্চাশ টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। প্রত্যেক সুবিধাভোগীদের ফোন নাম্বারে এই টাকা যাচ্ছে। কিন্তু নাম্বারে ফোন দিয়ে লালমাই উপজেলা সমাজসেবা অফিসের লোক পরিচয় দিয়ে পিন নাম্বার নিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। পরে নগদ থেকে টাকা বের করে নিচ্ছে। যাদের কাছে ফোন করা হচ্ছে তাদের নাম ঠিকানাসহ বলে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে বই নেওয়ার কথা বলে পিন নাম্বার নিয়ে যায়। এভাবে ভাতার টাকা নিয়ে যাচ্ছে প্রতারক চক্রটি।
প্রতারণার শিকার কয়েকজন ভাতাভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাতা দেওয়ার সময় সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও নগদ অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন করে বলেন, আপনার ভাতার টাকা মোবাইল একাউন্টে পাঠানো হবে। দয়া করে আপনার মোবাইলে প্রেরিত কোড (ওটিপি) নম্বরটি বলেন। নাম্বার বলার সঙ্গে সঙ্গে তার নগদ একাউন্টে আসা টাকা উধাও।
উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের জামমুড়া গ্রামের সফিকুর রহমান বলেন, ফোন দিয়ে সমাজসেবা অফিসের পরিচয় দিয়ে বই নেওয়ার কথা বলে পিন নাম্বার নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী আমেনা খাতুন একই অভিযোগ করেন।
বেলঘর গ্রামের আবদুর রশিদ বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতার বই নিতে লালমাই উপজেলা অফিসে আসার কথা বলে পিন নিয়ে যায়। এমন অসংখ্য ভাতাভোগীরা অফিসে এসে ভীড় জমাচ্ছেন। অফিসের সমস্ত কাজ করেন ইউনিয়ন সমাজকর্মী সাইফুল ইসলাম ও কাজল রেখা। অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি করা কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করেন এমদাদুল হক। ভুক্তভোগীদের প্রশ্ন একজন ভাতাভোগীর নাম ঠিকানাসহ সব তথ্য কি করে ফাঁস হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, সমাজ সেবা অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে চলছে এমন প্রতারণা। তারা বলেন, কর্মকর্তারা জরিত না থাকলে আমাদের নাম ঠিকানা ও ভাতা দেওয়ার সঠিক সময় প্রতারক চক্র কিভাবে জানে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর লালমাই উপজেলা কর্মকর্তা হ্যাপি আক্তার বলেন, নগদের কাছেও তথ্য রয়েছে। প্রতারকরা বিভিন্ন কৌশল করে ভাতা ভোগীদের মোবাইলে কল করে পিন নাম্বার নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করছে। তিনি অভিযোগের তীর ভাতা ভোগীদের দিকেই দিচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে তিনি জানিয়েছেন।