ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আমাদের জাতীয় জীবনে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতা দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রাম আর ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের ফসল। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে যত বেশি সম্ভব চলচ্চিত্রের পর্দায় তুলে ধরতে হবে।
মন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে স্বল্পদৈঘ্য চলচ্চিত্র ‘জয় বাংলা’ এর প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নূহ উল আলম লেনিন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ ফারুক আহমেদ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো: মিজানুর রহমান এবং স্বল্পদৈঘ্য চলচ্চিত্র ‘জয় বাংলা’ এর পরিচালক শায়লা রহমান তিথি বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জয় বাংলা শ্লোগানটি ছিল প্রেরণাদায়ক একটি শক্তি। দেশের ভিতর ও বাইরেও যুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধারা জয় বাংলা বাহিনী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার জয় বাংলা শ্লোগানের সৃষ্টির ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ১৯৬৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মধুর ক্যান্টিন থেকে বন্ধু আফতাব আহমেদ ও চিশতি হেলালুর রহমান জয় বাংলা শ্লোগানটি প্রথম উচ্চারণ করেন।
কেন্টিনে ৫/৬ জনের দলটির সাথে মন্ত্রী নিজেও এই শ্লোগানটি প্রথম ধ্বণিত করেন উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু এই শ্লোগানটি গ্রহণ করেছিলেন। মন্ত্রী জয় বাংলা চলচ্চিত্রটিকে অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি কাজ উল্লেখ করেন এবং তিনি এর সাথে জড়িত শিল্পী ও কলাকোশলীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির দীর্ঘ নয় মাসের সংগ্রামের একটি মহাকাব্য। এ মহাকাব্য রুপালি পর্দায় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা শুরু হয় সেই ১৯৭২ থেকেই, যা আজও চলমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযুদ্ধের সিনেমাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, সরকারী অনুদানও দেয়া হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ বাংলা ও বাঙালির বীরত্ব ও গৌরবের গল্প। এই গল্পে নারীদের ভূমিকা যথাযথভাবে তুলে আনতে হবে।
তিনি বলেন, যুদ্ধের নয় মাস আমার মা সহ এ দেশের মায়েরা বঙ্গবন্ধুর জন্য রোজা রেখেছেন। এদেশের মায়েরা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার দিয়েছেন আশ্রয় দিয়েছেন। নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার মায়েদের অবদান মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রে বেশি করে তুলে ধরার অনুরোধ করেন তিনি। মন্ত্রী জয় বাংলা চলচ্চিত্রের চেয়ারম্যান রূপী খল নায়ক চরিত্রটিতে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের বৈশিষ্ট্য সু্চারুভাবে পরিস্ফুটিত করায় পরিচালক শায়লা রহমানের প্রশংসা করেন। মুক্তিযুদ্ধের শক্ররাও কিভাবে সমাজে মুক্তিযোদ্ধা সেজে সুবিধা নিচ্ছেন সেটি ছবিটিতে সুন্দরভাবে চিত্রিত হয়েছে বলে মন্ত্রী চলচ্চিত্রটি দেখার পর মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জয় বাংলা চলচ্চিত্রটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।