চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন বিক্রি ১৯ শতাংশ কমেছে। কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের মার্কেট মনিটরের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
দেশটিতে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে স্যামসাং, গুগল ও টিসিএল যথাক্রমে ২৬, ৩৭ ও ৫১ শতাংশ বিক্রি কমেছে। তবে মটোরোলা ও নকিয়া এইচএমডি আগের বছরের তুলনায় চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে যথাক্রমে ৩১ ও ১৭ শতাংশ বিক্রি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে অ্যাপলের ডিভাইস বিক্রি ১১ শতাংশ কমেছে। পরবর্তী সময়ে আইফোন ১৫ সিরিজ উন্মোচনের পর চতুর্থ প্রান্তিকে কোম্পানির বিক্রি কিছুটা বেড়েছে।
২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিক সম্পর্কে গবেষণা বিশ্লেষক অ্যানালিস্ট ম্যাথিউ ওর্ফ বলেন, ‘এ সময় গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদা কম থাকলেও অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারাররা (ওইএম) স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়ানোতেই আগ্রহী ছিল। কিন্তু গ্রাহক সেভাবে তাদের ডিভাইস আপডেট করেননি। এর হার সাধারণের তুলনায় অনেক নিচে ছিল।’
তিনি বলেন, ‘উন্নত বাহ্যিক গঠনের স্মার্টফোন, ডিভাইসে সে রকম কোনো বৈশিষ্ট্য না থাকা এবং সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিতিশীল পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোন বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।’
সিনিয়র গবেষণা বিশ্লেষক মরিস ক্লেহেন বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে স্মার্টফোন বিক্রির হার ১৯ শতাংশ কমলেও কিছু ব্র্যান্ড বা কোম্পানি এ সময় প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছে। এদের মধ্যে মটোরোলা এবং নকিয়া চাহিদা অনুযায়ী বাজার ধরে রাখতে পেরেছে। পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে খুচরা দোকানগুলোয় পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।’
ফোল্ডেবল ডিভাইস সম্পর্কে ক্লেহেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোনে বাজারের জন্য ফোল্ডেবল ডিভাইস ভালো অবস্থানে রয়েছে। কেননা বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফর্মে বিভিন্ন কোম্পানি ফোল্ডেবল ডিভাইস তৈরি করছে। আগস্টে স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ও ফোল্ড ৫ উন্মোচন করেছে। অন্যদিকে বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের শুরুর দিকে ওয়ানপ্লাস ও মটোরোলা প্রথম ফোল্ডেবল ডিভাইস উন্মোচন করেছে।’
সেলফোনের বাজারে প্রিপেইড ও পোস্টপেইড গ্রাহকদের প্রভাবও রয়েছে। সহযোগী পরিচালক হানিশ ভাটিয়া বলেন, ‘স্পেকট্রাম ও এক্সফিনিটির সঙ্গে পোস্টপেইড ক্যারিয়ারগুলোর তুমুল প্রতিযোগিতা চলছে।’ প্রিপেইড খাতে ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মিন্ট মোবাইল অধিগ্রহণ করেছে টি-মোবাইল। ওয়্যারলেস পরিষেবার পরিধি বাড়াতে গিয়ে ভেরিজন এর আরেক পরিষেবা ট্র্যাকফোনের গ্রাহক হারিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোন বাজার ও আইফোন ১৫ উন্মোচনের বিষয়ে গবেষণা পরিচালক জেফ ফিল্ডহ্যাক বলেন, ‘প্রান্তিকজুড়ে টেলিকম অপারেটরগুলো আকর্ষণীয় অফার দিয়ে এলেও আপডেট করার যে ব্যয় তা ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। চতুর্থ প্রান্তিকে এ হারে পরিবর্তন আসবে বলে আমরা আশাবাদী।’
যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসীদের একটি বড় অংশ এখনো আইফোন ১১ ও ১২ ব্যবহার করে থাকে। চলতি বছর এদের অনেকেই ১৫ সিরিজে স্থানান্তর হবে বলে ধারণা করছেন প্রযুক্তিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকরা। তবে সেটি অনেকটাই নির্ভর করবে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মূল্যস্ফীতিসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর এমনটাই অভিমত সংশ্লিষ্টদের।