ভারতের পর এবার শর্ট ভিডিওকেন্দ্রীক অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ করেছে নেপাল। কারণ হিসেবে এর কনটেন্ট ‘সামাজিক সম্প্রীতির জন্য ক্ষতিকর’ বলে জানিয়েছে দেশটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোম্পানিগুলোর নেপালে লিয়াজোঁ অফিস খোলার আইনী বাধ্যবাধকতা আরোপ করার কয়েকদিনের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিল দেশটি।
প্রায় একশ কোটি মাসিক ব্যবহারকারীওয়ালা এই অ্যাপটি এরইমধ্যে আরও অনেক দেশেই নিষিদ্ধ হয়েছে। ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ টিকটককে নিষিদ্ধ করেছে। এই বছরের শুরুর দিকে প্রথম মার্কিন অঙ্গরাজ্য মন্টানা অ্যাপটিকে নিষিদ্ধ করে। এরও আগে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট তাদের নেটওয়ার্কে অ্যাপটিকে নিষিদ্ধ করেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল (১৩ নভেম্বর) সোমবার নেপালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দেশটির যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রেখা শর্মা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর করা হবে। টেলিকম কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্ল্যাটফর্মটি সমাজকে দূষিত করছে।
তবে জোট সরকারের অংশ নেপালি কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা গগন থাপা টিকটকের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রোধ করার একটি প্রয়াস এবং কর্মকর্তাদের প্ল্যাটফর্মবিষয়ক বিধিমালায় আরও মনোযোগ দেওয়া উচিত। এর আগেও বহুবার টিকটক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তদন্তের আওতায় এসেছে। তবে টিকটকের মূল কোম্পানি বাইটড্যান্স তাদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করেছে। সর্বশেষ এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বিবিসির যোগাযোগে টিকটক কোনো সাড়া দেয়নি।
নেপালের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, দেশটিতে গত চার বছরে টিকটক সংশ্লিষ্ট এক হাজার ছয়শ সাইবার অপরাধের মামলা হয়েছে। এদিকে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের প্রতিবেদন বলছে, নেপালে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টিকটকের অবস্থান তৃতীয়।
বিশ্বজুড়ে প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ইউটিউব ও ফেইসবুক সব বয়সীদের মধ্যে জনপ্রিয় হলেও ১৬ থেকে ২৪ বয়সীদের মধ্যে টিকটকের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। এদের মধ্যে যারা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করেন, তাদের ৮০ শতাংশের কাছেই এ প্ল্যাটফর্ম জনপ্রিয়। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতে ২০২০ সালে টিকটক ব্যান করা হয়। পাকিস্তান ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে অন্তত চারবার অ্যাপটিকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে এবং গত মাসে ইন্দোনেশিয়ায় টিকটকের অনলাইন শপিং পরিষেবা বন্ধ ছিল।