গত বছর আনুষ্ঠানিকভাবে ফাইভজি যুগে প্রবেশ করে ভারত। এর পর থেকে দেশটিতে ফাইভজি স্মার্টফোনের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। এর মাধ্যমে দেশটিতে ফাইভজির বিকাশে বড় প্রভাবক হিসেবে প্রিমিয়াম স্মার্টফোন উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারীরাও সুবিধা পাবেন। এর মাধ্যমে ভারতীয় ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। ভবিষ্যতে মোবাইল ডাটা ব্যবহারের পরিমাণও বাড়বে। এশিয়ার দেশটিতে রিলায়েন্স জিও ও ভারতী এয়ারটেল প্রথম ফাইভজি পরিষেবা চালু করেছে। ভোডাফোন এখনো এ পরিষেবা চালু করতে পারেনি।
ভারতে বর্তমানে ফাইভজি ডিভাইসের দাম নিম্নমুখী। অনলাইন ও অফলাইন খুচরা দোকানের বিভিন্ন ছাড় ও সুবিধার কারণে দাম কমেছে। যে কারণে ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে রেকর্ড ২ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ভারতে ১ কোটি ৭০ লাখ ইউনিট ডিভাইস বিক্রি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে ৬৫-৭০ হাজার রুপি মূল্যের প্রিমিয়াম স্মার্টফোনের বাজার ৪৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আর এর নেতৃত্বে ছিল কুপারটিনোভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। এ সময় কোম্পানিটির বাজার হিস্যা ৪ থেকে ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
অন্যদিকে ডিভাইসের গড় বিক্রয় মূল্য ২৫৩ ডলারে উন্নীত হয়েছে যা প্রান্তিকওয়ারি হিসাবে ৫ শতাংশ এবং বছরওয়ারি হিসাবে, ১২ শতাংশ বেড়েছে। স্মার্টফোন উৎপাদনকারীরা বর্তমানে সহজলভ্য ফাইভজি ডিভাইস বাজারজাতে বেশি আগ্রহী হচ্ছে।
অ্যাপলের পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্ট স্যামসাংও বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বাজার হিস্যা ২৪ থেকে ৩৬ শতাংশে উন্নীত করতে পেরেছে। গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৫, ফ্লিপ ৫, গ্যালাক্সি এস২৩প্লাস ও এস২৩ আল্ট্রা স্মার্টফোন ভ্যারিয়েন্ট উন্মোচনের মাধ্যমে কোম্পানিটি প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক তথ্য কমিশনের (আইডিসি) জরিপ সূত্রে এটি জানা গেছে।
ভারতের বাজারে ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বিক্রিও বেড়েছে। ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে পাঁচ লাখের বেশি ডিভাইস বিক্রি হয়েছে। যেখানে ৬৫ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে শীর্ষে ছিল স্যামসাং। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি মটোরোলা ডিভাইসের দাম কমানোর উদ্যোগ নেয়ায় গত বছর ফোল্ডেবল ডিভাইসের গড় বিক্রয়মূল্য ১ হাজার ৩১৯ থেকে কমে ১ হাজার ১৯৮ ডলারে এসেছে। বর্তমানে তাইওয়ানের মিডিয়াটেক ও মার্কিন কোম্পানি কোয়ালকমও এ প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করেছে। চিপ উৎপাদন খাতে প্রতিযোগিতা ধরে রাখার পাশাপাশি ফাইভজির চাহিদা বাড়াতে কোম্পানিগুলো প্রযুক্তির উন্নয়ন করছে এবং বাজার তৈরি করছে। ভারতের সেলফোন ব্যবহারকারীরা ফোরজি থেকে ফাইভজি নেটওয়ার্কে স্থানান্তরিত হচ্ছে। আইডিসির জরিপ অনুযায়ী, ভারতে তৃতীয় প্রান্তিকে ফাইভজি স্মার্টফোনের গড় বিক্রয়মূল্য ৩৫৭ ডলারে নেমে এসেছে যা আগের বছরের তুলনায় ৯ শতাংশ কমেছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের বাজারে ফাইভজি স্মার্টফোন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং মূল বাজারে পরিণত হচ্ছে। পরের কয়েক প্রান্তিক এ ধারা অব্যাহত থাকবে। কেননা দেশটির টেলিকম অপারেটররা ফাইভজি নেটওয়ার্ক বিস্তারে কাজ করছে।