চাকরির বাজারে ক্রমশ মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), যা প্রায় ৪০ শতাংশ চাকরিকে প্রভাবিত করবে। এ তথ্য দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ।
এআই-র প্রভাবে বৈশ্বিক বৈষম্য পরিস্থিতি আরো তীব্র হবে বলে ধারণা করছেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টেলিনা জর্জিয়েভা।
আজ সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সুইজারল্য়ান্ডের দাভোসে শুরু হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। এর আগেই ওয়াশিংটনে একটি সাক্ষাৎকারে এআই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন জর্জিয়েভা।
তিনি বলেন, এআই ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট সামাজিক সংকট আরো জোরদার হওয়ার আগে এর মোকাবেলায় নীতিনির্ধারকদের ভাবতে হবে।
আইএমএফের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, চাকরির একটি বৃহৎ অংশকে প্রভাবিত করবে এআই। উন্নত অর্থনীতির দেশে এ প্রভাব ৬০ শতাংশ পর্যন্ত।
প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে শ্রমের চাহিদা কমতে পারে বৈশ্বিক উৎপাদনে। ফলে অনেকেই চাকরিচ্যুত হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে আইএমএফ।
অবশ্য নিম্ন আয়ের দেশের চাকরি বাজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব ২৬ শতাংশ। কারণ এসব দেশে এমন প্রযুক্তি কাজে লাগানোর মতো দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে। তবে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর সঙ্গে নিম্ন আয়ের দেশের বৈষম্য আরো তীব্র হতে পারে।
আইএমএফ বলছে, এআই-র কারণে যেমন চাকরি চলে যেতে পারে, আবার কাজকে আরো সহজ করেও তুলতে পারে। উচ্চ আয়ের ও তরুণ কর্মীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে মজুরিতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বৃদ্ধি দেখতে পেলেও নিম্ন আয়ের ও বয়স্ক কর্মীরা পিছিয়ে পড়তে পারেন।
ক্রিস্টেলিনা জর্জিয়েভা বলেন, আমাদের উচিত নিম্ন আয়ের অর্থনীতিগুলোকে সাহায্য করা, যাতে তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা নিতে পারে। তাই এ প্রযুক্তি কিছুটা ভয়ের হলেও একই সঙ্গে প্রচুর সুযোগও রয়েছে।
দুই ধরনের অর্থনীতির তুলনা করলে দেখা যায়, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে মজুরি নির্ধারণে ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হতে পারে এসব দেশের বয়স্ক কর্মীরা।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, সমাজে এমন বৈষম্য একসময় মানবজাতির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
অবশ্য প্রযুক্তির বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা নতুন কিছু নয়। এ নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছে অনেক দেশ। যেমন গত মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা এআই ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের প্রথম বিস্তৃত আইন নিয়ে একটি অস্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছান।