চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) উত্তর আমেরিকায় স্মার্টফোন সরবরাহ ১৮ শতাংশ কমে ৩ কোটি ৬৪ লাখ ইউনিটে দাঁড়িয়েছে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিস প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর প্রথম প্রান্তিকে উত্তর আমেরিকায় স্মার্টফোন সরবরাহ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। ওই প্রান্তিকে বাজারটিতে স্মার্টফোনের সরবরাহ ৪ কোটি ৪৪ লাখ ইউনিটে পৌঁছায়। টানা কয়েক বছর বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ স্মার্টফোন বাজারগুলোতে সরবরাহ কমলেও উত্তর আমেরিকায় ডিভাইস সরবরাহে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। কিন্তু অ্যাপলের ডিভাইস ব্যবসায় মন্দাভাব এবং চীনভিত্তিক জেডটিইর অনুপস্থিতির কারণে উত্তর আমেরিকায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে স্মার্টফোন সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
উত্তর আমেরিকার স্মার্টফোন বাজারের ৪০ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে অ্যাপল। বাজারটির ২৯ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ দখলে নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং ও এলজি ইলেকট্রনিকস। এছাড়া বাজারটির ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৪ শতাংশ দখলে নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে চীনভিত্তিক লেনোভো এবং টিসিএল।
চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে শীর্ষ অবস্থানে থাকা অ্যাপল উত্তর আমেরিকায় ৪৫ লাখ ইউনিটের কিছু বেশি আইফোন এক্সআর সরবরাহে সক্ষম হয়েছে। স্যামসাং ২০ লাখ ইউনিটের কিছু বেশি গ্যালাক্সি এস১০প্লাস এবং গ্যালাক্সি এস১০ই মডেলের হ্যান্ডসেট সরবরাহ করেছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে উত্তর আমেরিকার স্মার্টফোন বাজারে স্যামসাংয়ের দখল ছিল ২৩ শতাংশ, যা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেড়ে ২৯ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছেছে।
উত্তর আমেরিকায় সেলফোন ক্যারিয়ারের মাধ্যমে ডিভাইস বিক্রির কার্যক্রম পরিচালনা করছে স্যামসাং। বাজারটিতে ক্যারিয়ারগুলোর প্রোমোশনাল অফারের কারণে প্রথম প্রান্তিকে লাভবান হয়েছে স্যামসাং। বিশেষ করে, গ্যালাক্সি এস১০ই হ্যান্ডসেটটিতে প্রণোদনা ঘোষণা করায় বিক্রি বেড়ে যায়। উত্তর আমেরিকার হ্যান্ডসেট বাজারে ওয়ানপ্লাস, গুগল ও জেডটিইর মতো ডিভাইস নির্মাতারা উপস্থিতি বাড়াতে জোর দিচ্ছে। যে কারণে চাপে রয়েছে স্যামসাং। বাজারটিতে আধিপত্য বাড়াতে সাশ্রয়ী দামে প্রিমিয়াম ফিচারসংবলিত স্মার্টফোন সরবরাহে জোর দিচ্ছে ওয়ানপ্লাস। গুগল উত্তর আমেরিকায় ডিভাইস ব্যবসা জোরদারে একাধিক শীর্ষস্থানীয় ক্যারিয়ারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। অন্যদিকে জেডটিই লো-এন্ড ডিভাইস সরবরাহের মাধ্যমে উত্তর আমেরিকায় ব্যবসা জোরদারে কাজ করছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে উত্তর আমেরিকায় সব মডেল মিলে মোট ১ কোটি ৪৬ লাখ ইউনিট আইফোন সরবরাহে সক্ষম হয়েছে অ্যাপল, যা গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে ১৯ শতাংশ কম। তবে ডিভাইস সরবরাহ কমলেও উত্তর আমেরিকার স্মার্টফোন বাজারের ৪০ শতাংশ দখলে রাখতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ক্যানালিসের গবেষণা বিশ্লেষক ভিনসেন্ট থিলকের ভাষ্যে, উত্তর আমেরিকার সেলফোন ক্যারিয়ার এবং খুচরা বিক্রেতাদের কারণে বাজার দখলে শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে অ্যাপল। ক্যারিয়ার এবং খুচরা বিক্রেতাদের পরামর্শে বাজারটিতে আইফোন ৬এস এবং আইফোন ৭-এর মতো পুরনো মডেলগুলোয় মূল্যছাড় ঘোষণা করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। যে কারণে ডিভাইস বিক্রিতে কিছুটা এগোতে পেরেছে অ্যাপল।