ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সাথে আজ আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে তাঁর দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনেস্কো বাংলাদেশ এর প্রধান ড. সুজান ভাইজ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় ইউনেস্কো এবং আইসিটি বিভাগ আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) নিয়ে একসাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, শিক্ষা, ডিজিটাল লিটারেসি, সহনশীল এবং প্রগতিশীল প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইউনেস্কোর সাথে এজেন্সি টু ইনোভেট আওতায় এটুআই প্রকল্প ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আগামী দিনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে আমাদের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক এবং ব্যবসায়িকদের আরো বেশি সচেতন করে গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিক এবং প্রশাসনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদেরকে এআই সম্পর্কে সচেতন এবং দেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকেও দক্ষতা উন্নয়ন করতে চাই। এছাড়া সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এআই লিটারেসি, সাইবার সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয় আইন এবং নীতিমালা নিয়ে আইসিটি বিভাগ ও ইউনেস্কো কীভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এআই নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এরপর আইন করা হবে। এ নিয়ে ইউনোস্কো বাংলাদেশকে সহযোগিতার পথরেখা তৈরি করছে। তিনি বলেন, ইউনেস্কোর সঙ্গে ১৮-২৫ বছরের শিক্ষার্থীদের সাংবাদিকতা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে এটুআই হিউম্যান ডেভলপমেন্ট মিডিয় উইং। এছাড়াও সারাদেশে স্থাপিত শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব সমূহে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এআই শিক্ষাকে বিভিন্ন বয়সের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের সচেতন করা হবে।
আইসিটি বিভাগ এবং ইউনেস্কো একসাথে মূলত সচেতনামূলক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণকার্যক্রম পাশাপাশি স্মার্ট লিডারশীপ একাডেমির সাথে চারটি সেশন আয়োজন করা হবে। এআই লিটারেসি সম্পর্কে সচেতনা তৈরি করার জন্য এমপি-মন্ত্রী পর্যায়ে, সচিব পর্যায়ে, বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং ইউজিসি তাদের অর্থাৎ পলিটিক্যাল লিডারশীপ, ব্যুরোক্রেটিক লিডারশীপ, একাডেমি এবং ইন্ডাস্ট্রি এই চারটা স্ট্রেকহোল্ডার এবং পলিসি মেকারদের সাথে এআই নিয়ে কাজ করা হবে বলেও তিনি জানান।
স্মার্ট বাংলাদেশ লক্ষ্য পূরণে আইসিটি বিভাগ এবং ইউনেস্কো এক সাথে কাজ করবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় যে ৫ কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে তাদেরকে স্মার্ট দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি সরকারের সেবাগুলো পেপারলেস এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাই। তিনি ডিজিটাল লিটারেসি, এআই লিটারেসি, সচেতনা, প্রশিক্ষণ সেগুলো ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক, রাজনীতিক আইনজীবী, চিকিৎসক, এবং সাংবাদিকদের জন্য কিভাবে কাজে লাগানো যায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং বেশ কিছু জায়গায় ঐক্যমত পোষণ করেছি আমরা।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনেস্কো বাংলাদেশ এর প্রধান ড. সুজান ভাইজ বলেছেন, আলোচনাটি খুবই চমৎকার। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে মন্ত্রণালয়ের আগ্রহ দেখে আমি অভিভূত। আমরা বেশ সহযোগিতার বেশ কয়েকটি ভালো জায়গা খুঁজে পেয়েছি। এর মধ্য শুরুতেই আছে এআই। এছাড়াও সবচেয়ে তরুণ বয়সীদের জন্য এআই শিক্ষা, ডিজিটাল স্বাক্ষরতা ও সাংবাদিকদের সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণ নিয়ে আলাপ হয়েছে। স্মার্ট সিটি, স্মার্ট সিটিজেন ও স্মার্ট লিডার গড়তে বাংলাদেশকে সব ধরণের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত ইউনেস্কো।