এআই যে ধীরে ধুরে মানুষের চেয়ারে জায়গা করে নিতে চলেছে সেই আশঙ্কা শুরু থেকেই। তবে এবার বড় ঘটনা ঘটাল ক্লার্না নামক এক কোম্পানির এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট। একাই ৭০০ জন কর্মচারীর চাকরিতে থাবা বসিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ইতিমধ্যে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছাটাই শুরু হয়েছে। যার পেছনে বড় অবদান রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির।
এআইয়ের থাবা থেকে আদৌ চাকরি বাঁচানো সম্ভব? পাড়ার চায়ের দোকান থেকে অফিসের কিউবিকলে এখন সেই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে। তবে সেই আশঙ্কা এদিন সত্যি প্রমাণ করল ক্লার্না নামক এক কোম্পানির এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট। যেখানে এআইয়ের কোপে চাকরি হারিয়েছেন ৭০০ জন কর্মচারী।
সুইডিশ কোম্পানি ক্লার্না। বাই নাও পে লেটার পরিষেবার জন্য বিখ্যাত তারা। সেখানে অনেক দিন আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে এআই বিপ্লব। যার জেরে চাকরি থেকে ছাঁটাই হয়েছেন ৭০০ জন কর্মচারী। সংখ্যাটা শুনে চক্ষু চড়কগাছ হতে পারে যে কারও। এই পদক্ষেপের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।
সংবাদ সংস্থা ফাস্ট কোম্পানির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির দাবি করেছে, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ৭০০ জন কর্মচারীর সমান দক্ষ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাস্তবায়ন হতেই এক বছরে ৭০০ জনের বেশি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। যা প্রায় কোম্পানির মোট কর্মসম্পদের 10 শতাংশ।
কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রসঙ্গে ক্লার্না সিইও জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মুদ্রাস্ফীতি এবং মন্দার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সমালোচনার শুরু হয় যখন তিনি লিঙ্কডিনে প্রকাশ্যে একটি তালিকা পোস্ট করেছিলেন, যেখানে ছাঁটাই হওয়ার বেশ কিছু কর্মচারীর নাম ছিল।
সংবাদ সংস্থা যখন ফাস্ট কোম্পানি যখন এই ছাটাই প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করে তিনি জানান, এই ছাঁটাইয়ের সঙ্গে এআই অ্যাসিস্ট্যান্টের কোনও সম্পর্ক নেই। যদিও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কোপে ৭০০ জন কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা শোরগোল ফেলেছে বিভিন্ন মহলে।
ইতিমধ্যে ওপেনএআইয়ের মতো কোম্পানি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলেছে চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে। লড়াইয়ে নেমেছে বড় বড় টেক জায়েন্ট যেমন গুগল, মাইক্রোসফট, অ্যাপল এবং মেটা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্রোতে ভেসেছেন অন্যান্য দেশের তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও।
এআইকে কাজে লাগিয়ে পরিষেবা গোছানোই লক্ষ্য কোম্পানিগুলির। এই ইঁদুর দৌড়ের যুগে অনেকেই আছেন যারা প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। ফলস্বরূপ মনে বাসা বাধছে চাকরি হারানোর ভয়। আর এই ধরনের ঘটনার পর সেই উদ্বেগ যেন আরও বাড়ছে।
আগামী দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যে আরও জেঁকে বসতে চলেছে সেই সাবধানবাণী অনেকদিন আগেই দিয়ে রেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান-সহ একাধিক ক্ষেত্রে প্রবেশ করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর তা ভবিষ্যতে যে আরও বড় রূপ ধারণ করতে চলেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।