বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে পরিবেশবান্ধব ও সর্বোচ্চ বিদুৎসাশ্রয়ী এয়ার কন্ডিশনার বা এসি উৎপাদনে বরাবরই গুরুত্ব দিয়ে আসছে ওয়ালটন। গ্রাহকদের জন্য নিশ্চিত করছে সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা। এরই ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী এসি সার্ভিসিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রকৌশলী, টেকনিশিয়ান ও সংশ্লিষ্টদের জন্য মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন।
কর্মশালায় দেশব্যাপী বিভিন্ন স্তরের প্রায় ৩ হাজার সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করে এসি সার্ভিসিংয়ে দক্ষতা বাড়াতে অংশগ্রহণকারীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কর্মশালায় সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা আরো বৃদ্ধি, সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিতে গ্রাহকদের সঙ্গে কথোপকথন ও আচার-আচরণ বিষয়সহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গ্রাহকদের জন্য এসি সার্ভিস নিশ্চিত করার উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে গত ১৫ ফেব্রæয়ারি, ২০২৪ তারিখে শুরু হয় ‘এয়ারকন্ডিশনার সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার কারিগরী, সফট স্কিল এবং নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ কর্মশালা- ২০২৪।’ ওয়ালটন এসি সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদ্যোগে আয়োজিত ওই কর্মশালা চলবে ২১ মার্চ, ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত। বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ অধিদপ্তর ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সার্বিক নির্দেশনা ও পরামর্শে চলছে এ কর্মশালা।
প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন প্রসঙ্গে ওয়ালটনের এসির চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) তানভীর রহমান বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় পরিবেশ সুরক্ষা। পরিবেশদূষণ কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে ইউএনডিপি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে ওয়ালটন। ওয়ালটন শুধু পণ্য উৎপাদনই করছে না, পরিবেশ নিয়েও যথেষ্ট সচেতন। এসি উৎপাদনে শতভাগ কম্পøায়েন্স রক্ষা ও ইনভার্টার টেকনোলজি ব্যবহার করছে ওয়ালটন। এসিতে পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে আর-২২ এর পরিবর্তে বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে আর-৩২ গ্যাস, যা পরিবেশকে রাখে নির্মল ও সুরক্ষিত। এছাড়া চলতি বছর থেকেই এসি উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে যুক্ত হচ্ছে আর-২৯০ গ্যাস। যা পরিবেশ সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এসির সার্ভিস পার্টনারদের সুপ্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দেশব্যাপী গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জনই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
ওয়ালটনের কমার্শিয়াল এসির রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন (আরঅ্যান্ডআই) বিভাগের প্রধান শামিম আক্তার মুগ্ধ জানান, ওয়ালটনই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ সিএফসি এবং হাইড্রো-ফ্লোরো কার্বন (এইচএফসি) গ্যাসমুক্ত পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদন করছে। ইতোমধ্যে পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানস্বরূপ জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছে ওয়ালটন। সার্ভির্সিংয়ের ক্ষেত্রে আর-৩২ এবং আর-২৯০ গ্যাস বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের টেকনিশিয়ানদের মধ্যে গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই এ কর্মশালার আয়োজন। পাশাপাশি টেকনিশিয়ানরা যাতে আর-২৯০ রেফ্রিজারেন্টযুক্ত ওয়ালটন এসি স্থাপনে সতর্ক থাকে, পারদর্শী হয় ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে নিজে সচেতন হন এবং গ্রাহকদের ভালো সার্ভিস দিতে পারেন সে জন্যই এই উদ্যোগ।
উল্লেখ্য, মন্ট্রিল চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ফ্রিজ ও এসির ক¤েপ্রসরে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী এইচএফসি গ্যাসের ব্যবহার বন্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর ফলে একবিংশ শতাব্দি শেষে অন্তত শূণ্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণায়ন রোধ করা সম্ভব হবে। ইউএনডিপির সহযোগিতায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে বায়ুমÐলে এইচএফসি গ্যাস নিঃসরণ রোধ করতে পারছে ওয়ালটন। রোধ করা সম্ভব হচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ। এভাবে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশ।
জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তর, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহায়তায় এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে দেশ ও দেশের বাইরে পরিবেশবান্ধব ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্য তৈরী ও সরবরাহ করে আসছে ওয়ালটন। তাদের প্রত্যাশা, এই কর্মশালায় সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারদের যেসব প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, তা বাস্তবে প্রয়োগ করে পরিবেশ সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখতে পারবে ওয়ালটন।