বিনা নোটিশে দেশের ইন্টারনেটভিত্তিক ওভার দ্য টপ প্ল্যাটফর্ম (ওটিটি) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। এতে দেশের ৩ কোটি গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন উল্লেখ করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চালু করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। অন্যথায় উচ্চ আদালতে যাওয়া কথা জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য ও দফতর সম্পাদক শেখ ফরিদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে সংগঠন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে এখনও ওটিটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়নি। নীতিমালা খসড়া প্রস্তুত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ঠিক সেই সময়ে সরকারের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কিছু সুবিধাবাদী ব্যক্তির স্বার্থ চরিতার্থ করতে ইন্টারনেট ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেডের টফি, গ্রামীণফোনের বাইস্কোপ, রবি আজিয়াটা লিমিটেডের বিংগো ও বঙ্গ টিভি দেখতে পারছে না দেশের প্রায় ৩০ মিলিয়ন অর্থাৎ ৩ কোটি গ্রাহক।
তিনি বলেন, সরকার একদিকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চায় এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারবিহীন সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে চায়। সরকারের এ ধরনের সুদূর প্রসারী চিন্তার কারণেই দেশে বর্তমানে যত টেলিভিশন বাজারে বিক্রি হয় সবই ইন্টারনেটভিত্তিক। ডিস ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতা গ্রাহকদের সাথে অসধাচরণ এক প্রকার স্বস্তি এনে দিয়েছিল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে গ্রাহক একটি ডিভাইসে তার সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে। ঠিক এই সময় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি আরও বলেন, তিন কোটি গ্রাহক এই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন প্রিমিয়াম ক্রয় করে থাকে। অর্থাৎ অপারেটররা ইতিমধ্যে গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ আদায় করেছে। কিন্তু সরকারের হঠাৎ সিদ্ধান্তে গ্রাহক এই সকল প্ল্যাটফর্ম দেখতে পারছে না। ফলে তারা আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উচ্চ আদালতে যাওয়া ঘোষণা দিয়ে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ওটিটি অপারেটর, বিটিআরসি, তথ্য মন্ত্রণালয়, এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিও অনুরোধ জানাবো দ্রুত এ সকল প্ল্যাটফর্ম খুলে দেওয়া হোক। গ্রাহকদের স্বার্থের চিন্তা করে এবং সরকারের তারবিহীন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই সুবিধা চালু রাখতে হবে। মুক্ত অর্থনীতি এবং মুক্ত ইন্টারনেট যুগে এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলেও আমরা মনে করি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন জনগণের পক্ষে উচ্চ আদালতে যেতে বাধ্য হবে।